ফুল, ফলের গাছ তো বটেই; প্রকৃতি তার আপন সৌন্দর্য আর নিসর্গ ঘ্রাণ নিয়ে জেগে আছে শ্রীমঙ্গলের শান্তিবাড়িতে। এখানে শহরের কোনো কোলাহল নেই।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাধানগর গ্রাম। এ গ্রামেই শান্তিবাড়ি শান্তিময়তা নিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। ফলেদের মধ্যে রসালো জামরুল চোখ মেলে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে। থোকা থোকা হয়ে ঝুলে রয়েছে গাছে।
শান্তিবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তানভির সরকার লিংকন বাংলানিউজকে বলেন, এই জামরুল গাছের বয়স প্রায় তিন বছর। দু’বছর থেকে ফল ধরছে। ফলগুলো খুব রসালো।
তিনি জানান, ‘আরো একটি বিষয় শুনলে আপনি কিছুটা অবাক হবেন। এই জামরুল গাছে কোনো প্রকারের সার ব্যবহার করা হয়নি। এমনি গোবর সারও দেয়া হয়নি। শুধু জামরুলই নয়, এখানেই প্রত্যেকটি ফলের গাছগুলো এভাবেই পরিচর্যা করা হচ্ছে। ’
প্রকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া ফলগাছের নিচের ঘাসসহ অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় উদ্ভিদগুলোকে আমরা কখনোই কাটি না বা উপড়ে ফেলে দিই না। ওরা ওদের মতোই থাকে। কেননা, এই ঘাসসহ অন্যান্য ছোট ছোট উদ্ভিদগুলো কিন্তু বড় বড় গাছের খাবার সংগ্রহ করে থাকে বলে জানান তানভির সরকার লিংকন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার এবং উদ্ভিদ গবেষক মো. আবদুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, জারুলের উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম Syzygium samarangense। এটি Myrtaceae পরিবারের উদ্ভিদ। এটি সারাদেশেই রয়েছে। বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ফলের বাগানে এটি চাষ হয়ে থাকে।
অর্গানিক বা প্রাকৃতিক গোবর সার ব্যবহারের পরিবর্তে পুরোপুরি প্রাকৃতিকভাবে পরিচর্যা প্রসঙ্গে এ গবেষক বলেন, কিছু কিছু প্রজাতির ঘাস রয়েছে তারা বড় বড় উদ্ভিদের জন্য পুষ্টির জোগান দেয়। সব উদ্ভিদই একটা আরেকটার সঙ্গে ইকোফ্রেন্ডলি টিকে থাকে। ঋতু অনুযায়ী পুরাতন ঘাসগুলো মরে যায়, পুনরায় নতুন ঘাসগুলো গজিয়ে উঠে। তখন মরে যাওয়া ঘাসগুলো বড় বড় উদ্ভিদের জন্য সারে পরিণত হয়।
এই জামরুল ফলটি খুব সুস্বাদু বা মিষ্টি না হলেও প্রচুর পুষ্টিগুণসম্পন্ন। সব ধরনের মৌসুমী ফলেরই কিন্তু আলাদা আলাদা পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং তা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলো আমাদের শরীরের নানান ভিটামিনের অভাবপূরণসহ শরীরের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে থাকে বলে জানান উদ্ভিদ গবেষক মো. আবদুর রহিম।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৮
বিবিবি/আরবি/