'পাহাড়ি বনমোগরগুলো যখন ডাকে তখন দারুণ এক অনুভূতি হয়। ভোরের দিকে চা বাগানের বাংলোতে বসে এই ডাক শুনতে পাই।
বনমোরগের ডাকের সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোর এবং ঠিক সন্ধ্যার আগে এরা উচ্চস্বরে ডাকে ‘কুক-কুরু-কু, কুক-কুরু-কু…। ’
পাহাড়ি বনমোরগের ইংরেজি নাম Red Junglefowl এবং বৈজ্ঞানিক নাম Gallus gallus। এদের লাল মাথা, লাল উজ্জ্বল ঝুঁটি এবং নিচের ঝুলন্ত লাল লতিকা দারুণ সৌন্দর্য ছড়ায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বনমোরগটির শরীর হয় জ্বলজ্বলে লাল রঙের। যা সহজে সবার দৃষ্টি আকর্ষক করে। আর বনমুরগিটি হয়ে থাকে বাদামি রঙের। মোরগটি মুরগির (স্ত্রী) অপেক্ষা বড়। মোরগগুলোর দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে ৬৫ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার এবং মুরগির দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার।
তিনি আরও বলেন, ‘এই বনমোরগ-মুরগি থেকে আমাদের গৃহপালিত মোরগ-মুরগিদের পোষ মানানো হয়েছে। পাহাড়ি বনমোরগগুলো খুব স্বাভাবিকভাবে উড়তে পারে। তবে আমাদের গৃহপালিত মোগরদের খুব কমই উড়তে দেখা যায়। বনমোরগগুলো মুরগি (স্ত্রী) থেকে অপেক্ষাকৃত সুন্দর হয়ে থাকে। গৃহপালিত মোরগগুলোও তাই। আর সেগুলো মধ্যে বিভিন্ন ভেরাইটি চলে এসেছে ওগুলো ততটা কালারফুল হয় না।
প্রাপ্তিস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একমাত্র উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল ছাড়া এরা সব বনাঞ্চলেই আছে, তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। মধুপুর, সুন্দরবনসহ সিলেটের বিভিন্ন বনাঞ্চল ও চা বাগানে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এরা মাটিতে চরে বেড়ায়। প্রজনন মৌসুমে মাটিতেই বাসা করে। তবে রাতে গাছের উপর উঠে রাত্রিযাপন করে।
তবে ফাঁদ পেতে এই বনমোরগদের শিকার করা থেকে এদের রক্ষা করতে পারলে আরো ব্যাপকসংখ্যায় এদের প্রজনন ঘটানো সম্ভব হবে বলে জানান এই বন্যপ্রাণী গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
বিবিবি/এএটি