ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

চা বাগানে সকালকে স্বাগত জানায় ‘পাহাড়ি বনমোরগ’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
চা বাগানে সকালকে স্বাগত জানায় ‘পাহাড়ি বনমোরগ’ পাহাড়ি বনমোরগ। ছবি: সাঈদ বিন জামাল

মৌলভীবাজার: চা গাছের ফাঁক দিয়ে সকালের হালকা আলো। এর মধ্যে প্রতিদিনের মতো নিজস্ব তেজোদ্দীপ্ত জানান দিয়ে চলেছে ‘পাহাড়ি বনমোরগ’। এক টিলা থেকে অন্য টিলায় প্রতিধ্বনিত হচ্ছে অসম্ভব চমৎকার এই ডাক।

'পাহাড়ি বনমোগরগুলো যখন ডাকে তখন দারুণ এক অনুভূতি হয়। ভোরের দিকে চা বাগানের বাংলোতে বসে এই ডাক শুনতে পাই।

সত্যি এটা দারুণ এক অনুভূতি…’ এমন কথা জানালেন হরিণছড়া চা বাগানের টি-প্লান্টার এবং পরিবেশপ্রেমী হক ইবাদুল।  

বনমোরগের ডাকের সময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোর এবং ঠিক সন্ধ্যার আগে এরা উচ্চস্বরে ডাকে ‘কুক-কুরু-কু, কুক-কুরু-কু…। ’

পাহাড়ি বনমোরগের ইংরেজি নাম Red Junglefowl  এবং বৈজ্ঞানিক নাম  Gallus gallus। এদের লাল মাথা, লাল উজ্জ্বল ঝুঁটি এবং নিচের ঝুলন্ত লাল লতিকা দারুণ সৌন্দর্য ছড়ায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বনমোরগটির শরীর হয় জ্বলজ্বলে লাল রঙের। যা সহজে সবার দৃষ্টি আকর্ষক করে। আর বনমুরগিটি হয়ে থাকে বাদামি রঙের। মোরগটি মুরগির (স্ত্রী) অপেক্ষা বড়। মোরগগুলোর দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে ৬৫ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার এবং মুরগির দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার।

তিনি আরও বলেন, ‘এই বনমোরগ-মুরগি থেকে আমাদের গৃহপালিত মোরগ-মুরগিদের পোষ মানানো হয়েছে। পাহাড়ি বনমোরগগুলো খুব স্বাভাবিকভাবে উড়তে পারে। তবে আমাদের গৃহপালিত মোগরদের খুব কমই উড়তে দেখা যায়। বনমোরগগুলো মুরগি (স্ত্রী) থেকে অপেক্ষাকৃত সুন্দর হয়ে থাকে। গৃহপালিত মোরগগুলোও তাই। আর সেগুলো মধ্যে বিভিন্ন ভেরাইটি চলে এসেছে ওগুলো ততটা কালারফুল হয় না।

প্রাপ্তিস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একমাত্র উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল ছাড়া এরা সব বনাঞ্চলেই আছে, তবে সংখ্যা খুব বেশি নয়। মধুপুর, সুন্দরবনসহ সিলেটের বিভিন্ন বনাঞ্চল ও চা বাগানে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। এরা মাটিতে চরে বেড়ায়। প্রজনন মৌসুমে মাটিতেই বাসা করে। তবে রাতে গাছের উপর উঠে রাত্রিযাপন করে।

তবে ফাঁদ পেতে এই বনমোরগদের শিকার করা থেকে এদের রক্ষা করতে পারলে আরো ব্যাপকসংখ্যায় এদের প্রজনন ঘটানো সম্ভব হবে বলে জানান এই বন্যপ্রাণী গবেষক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।