প্রধান খাবার ইঁদুর বলেই এ সাপটির ইংরেজি নামেও রয়েছে ইঁদুরের ইংরেজি নামের পরশ। এর ইংরেজি নাম Indian Rat Snake বৈজ্ঞানিক নাম Ptyas mucosa।
ফসলের ক্ষতিকর ইঁদুর খেয়ে এরা কৃষক এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্যের অভাবনীয় উপকার করে চলেছে। এই উপকারী সরীসৃপ প্রাণীটির প্রতি আরও সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যারয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণি গবেষক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশের লোকজনের মধ্যে একটি কুসংস্কার রয়েছে যে, দারাজ সাপ মানেই বিষাক্ত সাপ, একে দেখলে মারবেই এরকম। এটি সাইজেও বড় এবং দেখতে অনেকটা বিষাক্ত কোবরার মতো। এ সবকিছু দেখেই লোকজন মনে করে ‘দারাজ’ও খুবই বিষাক্ত সাপ এবং তাকে মারা উচিৎ। তবে এ সাপটি সম্পূর্ণভাবে বিষমুক্ত।
বিষের ভুল ধারণা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকের এটাও ধারণা আছে যে তার শুধু মুখে নয় লেজেও নাকি বিষ আছে। মুখের পরিবর্তে লেজ দিয়ে আঘাত করলে ওই আঘাতে স্থানটি ধীরে ধীরে পচে যাবে। আসলে এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। এই কুসংস্কারের কারণেই এ প্রজাতির সাপগুলো প্রাণ হারাচ্ছে।
উপকারের কথা উল্লেখ করে এ গবেষক বলেন, এদের প্রধান ও পছন্দের খাবার হলো ইঁদুর। তাই এরা ফসলি জমির আশপাশে থাকে এবং ফসলের ক্ষতিকারক ইঁদুর খেয়ে উপকার করে। ইঁদুর নিয়ন্ত্রণের জন্য এই সাপটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমরা না জেনে এই উপকারী প্রাণীটাকে হত্যা করে থাকি।
প্রাপ্তিস্থান উল্লেখ করে ড. কামরুল বলেন, এ সাপটি সারাদেশেই পাওয়া যায়। তাই এখনও থ্রেড ক্যাটাগরিতে আসেনি। তবে আগে যেরকম পাওয়া যেত তা আস্তে আস্তে কমে আসছে। এর কারণ হচ্ছে তার আবাসস্থল ধ্বংস এবং প্রজনন সমস্যা। এছাড়াও দ্বিতীয় কারণ হলো, লোকজনের হাতে প্রচুর পরিমাণ মারা পড়ে এই সাপটি।
এই দারাজ সাপটি যেমন নির্বিষ তেমন একেবারে নিরীহ প্রজাতির। হাত দিয়ে ধরলেও বেশি নড়াচড়া করে বা রেগে উঠে না। তবে কোনো কারণে এই সাপ রেগে গিয়ে কাউকে যদি কামড়ও দেয় তাতেও কিছুই হবে না বলে জানান প্রখ্যাত বন্যপ্রাণি গবেষক ড. কামরুল হাসান।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
বিবিবি/আরআর