প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি ইনাম আল হক বলেন, পৃথিবীতে উনিশ প্রজাতির হুতোম পেঁচা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে মাত্র দু’প্রজাতির হুতোম পেঁচা পাওয়া যায়।
হুতোম পেঁচা খুব বড় আকারের শক্তিশালী ধরনের একটি পাখি। এরা অনেক বড় বড় প্রাণী শিকার করতে পারে। হরিণশাবক পর্যন্ত ধরে নিয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বনাঞ্চলে এদের দেখা মেলে। পাকিস্তান, মালদ্বীপ, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়াম, ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে বলে জানান এ গবেষক।
শারীরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এদের দৈর্ঘ্য ৬৩ সেন্টিমিটার। ছেলে এবং মেয়ে পাখিদের চেহারা একই রকম দেখতে। এদের কান খাড়া শিঙের মতো। পুরো পা পালকে ঢাকা। এর বাদামি পিঠে পীতাভ ডোরা আছে। দেহের নিচের দিক সাদা এবং ইংরেজি বর্ণমালার ‘ভি’ আকৃতির কালচে তিলা থাকে। গলা ফিকে-সাদা ও বুকে কালো ডোরা দাগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভোরে এবং গোধূলিতে এরা খাদ্যসন্ধানে বেশি তৎপর থাকে। রাতের গভীর নির্জনতার মধ্যে তারা তাদের অবস্থানের চারদিকে শিকার খোঁজে বেড়ায় এবং নিচে নেমে পা দিয়ে শিকার ধরে। ময়ূর, বড় মোরগ, মৃগশাবক, শিয়াল, সজারু, খরগোশ, সাপ, মাছ প্রভৃতি তাদের শিকারের খাদ্য তালিকায় রয়েছে। এরা সর্বদা জীবিত প্রাণী শিকার করে খায়।
চিতিপেট-হুতোম পেঁচা বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি। আমাদের দেশে এরা বিপন্ন বলে বিবেচিত। নিশাচর পাখি বলেই এটি সহজে কারো চোখে পড়ে না। সারা রাত খুঁজে বেড়ালে ভাগ্যক্রমে কেবল তাদের দেখা পাওয়া সম্ভব। তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে দেশ থেকে এরা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানান এ পাখিবিদ ইনাম আল হক।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
বিবিবি/আরবি/