এদিক-ওদিক বড় বড় চোখে তাকিয়ে গাছের ডালে ডালে দেখছে পাখিদের আনা-গোনা। নাম জিজ্ঞেস করতেই পাত্তা নেই প্রশ্নকর্তার দিকে! খেয়াল কেবল গাছের ডালে ডালে।
কথা বলে জানা যায়, একজনের নাম রকিব হোসেন। সে পড়ছে এই গ্রামের পশ্চিম ভাড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে। অপরজন ফাহিম মিয়া। সে পড়ছে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে। শ্রেণিতে তারা বড়-ছোট হলে বন্ধুত্ব দারুণ।
পাখির নাম জানতে চাইলে- টিয়া, ময়না, আবাবিল, চড়া, বগি, চিল’ শব্দে আটকে যায় কথা। আর বলতে পারে না। দু’জনেরই একই অবস্থা। আজ স্কুল ফাঁকি দিয়েছো কেন? এমন প্রশ্নে উত্তর আসে- আজ আমাদের স্কুলের ম্যাডাম উপজেলায় গেছেন; তাই আমরা স্কুলে যাইনি। কাল যাবো।
পাখি মারো কেন? পাখি মারা তো ঠিক না। পাখি আমাদের প্রকৃতির বড় বন্ধু। পাখি গাছপালা সৃষ্টি করে আমাদের মূল্যবান অক্সিজেন দেয়। প্রভৃতি প্রকৃতিবান্ধব বাক্যে তাদের সঙ্গে কিছুসময় কাটালে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে। একজন তাদের পকেটে থাকা মার্বেলগুলো ছুড়ে ফেলে দিতে থাকে ধানক্ষেতের দিকে।
তোমাদের স্কুলের গিয়ে তোমাদের নামে নালিশ করবো যে তোমার স্কুল কামাই করে পাখি শিকার করছো? আর করবে এমন কখনো?
এমন কঠিন প্রশ্নে নতজানু হয় দুই শিশুর মন? প্রতিশ্রুতি দেয় কখনো পাখিদের গুলতি দিয়ে আহত বা হত্যা করবে না।
পশ্চিম ভাড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জবা রানি দেব বলেন, আমি এই দুই শিশুর প্রতি বিশেষ নজর দেবো– যাতে তারা নিয়মিত স্কুলে আসে। শুধু তা-ই নয়, পাখি শিকার নিরুৎসাহিত করতে এই এলাকার শিশুদের প্রতি আমি সচেতনতামূলক ক্লাস নেবো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
বিবিবি/এএ