ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সরকারি নির্মাণ কাজে ব্লক-ছিদ্রযুক্ত ইট বাধ্যতামূলক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৯
সরকারি নির্মাণ কাজে ব্লক-ছিদ্রযুক্ত ইট বাধ্যতামূলক সভায় বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ইটভাটার দূষণ থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সারা দেশে ক্রমান্বয়ে ইটের বিকল্প ব্লক ও ছিদ্রযুক্ত ইট উৎপাদন ও সরকারি ইমরাত নির্মাণ কাজে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

সোমবার (০৫ আগস্ট) সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
 
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


 
মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে প্রায় সাড়ে সাত হাজারের অধিক ইট ভাটায় বছরে প্রায় ২৩০ কোটি ইট উৎপাদনের জন্য প্রায় ৩৩৫ কোটি ঘনফুট মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করে ইট বানানোর কারণে কৃষি জমির উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। ঢাকা শহরের বায়দূষণের জন্য এর চারপাশের ইটভাটা প্রায় ৫৮ শতাংশ দায়ী। এ ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের ক্রমান্বয়ে পুরাতন পদ্ধতির ইটভাটা বন্ধ করে নতুন পদ্ধতিতে যেতে হবে।
 
দেশের ইটভাটাগুলোতে বছরে প্রায় ৫৭ লাখ টন কয়লা এবং কোনো কোনো ভাটায় গোপনে কাঠ পোড়ানোর ফলে পরিবেশ ও বায়ুদূষণ হচ্ছে বলে জানান পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধি।
 
নতুন পদ্ধতিতে আসার জন্য সময়ের প্রয়োজন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইটের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করার লক্ষ্যে টেন্ডার ডকুমেন্টসে ক্রমবর্ধমান হারে ব্লক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
 
সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ইট ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করার জন্য চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) টেন্ডার ডকুমেন্টসে ব্লক ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬০ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৪ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে ইটের ব্যবহার বন্ধ করে ব্লকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে সুপারিশ দিতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট, স্থাপত্য অধিদফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
 
সভায় আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের সভায় প্রচলিত ইটের পরিবর্তে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত কংক্রিট ব্লকের ব্যবহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
 
সার্বিক বিবেচনায় ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯’ বিধান রাখা হয়েছে যে- ইটের কাঁচামাল হিসেবে মাটির ব্যবহার কমানোর জন্য সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ইটভাটায় উৎপাদিত সব ধরনের ইটের একটি নির্দিষ্ট হারে ছিদ্রযুক্ত ইট ও ব্লক প্রস্তুতের জন্য নির্দেশনা জারি করতে পারবে।
 
এছাড়া মাটির ব্যবহার কমানোর উদ্দেশ্যে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইটের বিকল্প ব্যবহার হিসেবে ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে পারবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।