ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

এক নজরে ঝড়ের সতর্কতা সংকেত, কোনটার অর্থ কী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
এক নজরে ঝড়ের সতর্কতা সংকেত, কোনটার অর্থ কী ছবি প্রতীকী

ঢাকা: আবহাওয়া খারাপ কিংবা পরিস্থিতির অবনতি হলে সময় সময় তা পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন সতর্কতা দিয়ে মানুষকে সাবধান করে আবহাওয়া অফিস। তবে এই সতর্কতা দুই ধরনের নৌ এবং সামুদ্রিক সতর্ক সংকেত।

দেশের অভ্যন্তের ঝড় বিশেষ করে কালবৈশাখীর জন্য এবং কখনো কখনো সামুদ্রিক ঝড়ের কারণে নৌ সতর্কতা সংকেতগুলো দেওয়া হয়ে থাকে। আর সামুদ্রিক কোনো ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকলে দেওয়া হয় সামুদ্রিক সতর্কতা সংকেত।

এই সংকেত এক থেকে শুরু করে ঝড়ের সম্ভাব্য তীব্রতা নিরুপণ করে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর সংকেতগুলো সংরক্ষণ ও জারি করে। তবে নৌ সতর্কতা সংকেত হয় চারটি। আর সামুদ্রিক সতর্ক সংকেত হয় ১১টি।

১১টি সামুদ্রিক সংকেত-

এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত:

এই সতর্কতা দিয়ে বোঝানো হয় জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার (কি.মি.)। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।

দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত:

দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হলে এই সংকেত দেওয়া হয়। ঝড়ে বাতাসের একটানা গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি। এতে বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত:

বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকলে দেওয়া হয় এই সংকেত। এতে বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি.মি হতে পারে।

চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত:

এই সংকেতের অর্থ হলো ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কি.মি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনো আসেনি।

পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত:

এতে বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে বলে বোঝানো হয়। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ছয় নম্বর বিপদ সংকেত:

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ার শঙ্কা দেখা দিলে এই সংকেত দেওয়া হয়। তখন ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

সাত নম্বর বিপদ সংকেত:

এই সংকেতে বোঝানো হয়, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি। ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত:

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ার উপক্রম হলে এ সংকেত দেওয়া হয়। তখন ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি বা এর বেশি। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত:

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে, এ সংকেতে এমনটি বোঝানো হয়। এ সময় ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি বা এর বেশি হওয়ার শঙ্কা থাকে। আর প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে বলে বোঝানো হয়।

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত:

এ পূর্বাভাসে অর্থ হচ্ছে, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি বা তার বেশি হতে পারে।

১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত:

এই সংকেতের অর্থ হচ্ছে আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করছেন।

চারটি নৌ সতর্কতা সংকেত-

এক নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত:

এতে বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘণ্টায় ৬০ কি.মি. গতিবেগের কালবৈশাখী ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এই সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার ওপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।

দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত:

বন্দর এলাকায় নিম্নচাপের সমতুল্য তীব্রতার একটি ঝড় বা একটি কালবৈশাখী ঝড়। যার গতিবেগ ঘণ্টায় অনুর্ধ্ব ৬১ কিলোমিটার। নৌ-যান এদের কোনোটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট নৌ-যানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

তিন নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত:

বন্দর এলাকা ঝড়ে কবলিত। ঘণ্টায় বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কি.মি পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড়, যা সহসাই বন্দর এলাকায় আঘাত হানতে পারে। এ সময় সব ধরনের নৌ-যানকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।

চার নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত:

এই সংকেতের অর্থ হলো, বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত এবং বন্দর এলাকায় সহসাই আঘাত হানবে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার তদুর্ধ। এ সময় সব ধরনের নৌ-যানকে নিরাপদ আশ্রয় থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।