ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অবশেষে পঙ্গু বাঘিনীর ঠাঁই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে

আশরাফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১২
অবশেষে পঙ্গু বাঘিনীর ঠাঁই বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে

ঢাকা: সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়া একটি পা বিহীন অসুস্থ বাঘিনীকে অবশেষে অবমুক্ত করা হচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়ায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে।  

বনসংরক্ষক ড. তপন কুমার দে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, `প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে শারিরীক ভাবে দুর্বল ও শিকারে অক্ষম বাঘিনীটিকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে অবমুক্ত করার উদ্দেশ্যে আজ (সোমবার) সকালে ঢাকা থেকে বিশেষ খাঁচায় ট্রাকযোগে পাঠানো হয়েছে।

বিকেলের মধ্যে পার্কে ছাড়া হবে বাঘিনীকে। `

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরা জেলার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেতকাশি গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে এ অসুস্থ বাঘিনী। ওই বাড়ির যে কক্ষে বাঘটি ঢুকে পড়ে, সে মুহুর্তে সেই কক্ষে কেউ ছিল না। বাড়ির লোকজন বাঘ ঢোকার আলামত দেখে হৈচৈ করে এবং অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বজবজা ক্যাম্পের লোকজন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে গভীর রাতেই সেখানে পৌঁছে যায় ট্রাইঙ্কুলাইজার গান ও চেতনা নাশক ঔষধসহ বন বিভাগ ও ডব্লিউটিভি’র লোকজন। বাঘের আশ্রয় নেওয়া ঘরটিকে তাৎক্ষনিকভাবে ঘেরাও করা হয় বড় জাল দিয়ে। পরদিন রোববার ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে চেতনানাশক ঔষধ প্রয়োগ করে অচেতন করা হয় বাঘটিকে।

বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে বাংলানিউজকে জানান, বাঘিনীর বয়স আনুমানিক ৬-৭ বৎসর, ওজন-৭০ কেজি, লেজসহ দৈর্ঘ্য- ৭ ফুট ৬ ইঞ্চি। তবে তার পেছনের একটি পায়ের হাটুর নিচের অংশ নেই।

ড. তপন আর বলেন, ‘ধারনা করা হচ্ছে, নিকট অতীতে কোনও বাওয়ালির দাঁয়ের আঘাতে অথবা পাঁচারকারীদের ফাঁদে বাঘিনীর পা আটকিয়ে গিয়ে এ ধরনের অঙ্গহানীর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যেহেতু বাঘটি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না এবং শিকার ধরতে পারে না তাই লোকালয়ে চলে এসেছে। এ মূহুর্তে পঙ্গু বাঘিনীকে জঙ্গলে ছাড়া সঠিক হবে না। চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য কক্সবাজার সাফারি পার্ক বন্যপ্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য সাতক্ষীরা হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় আনা হয়।
 
সাতক্ষীরা থেকে বাঘটি সোমবার ভোরে আগারগাঁও বন ভবনে আনা হয়। বর্তমানে বাঘটি স্বাভাবিকভাবে খাওয়া দাওয়া করছে বলে জানিয়েছেন বনকর্মকর্তারা।

প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর সোমবার সকালেই বনবিভাগের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে খাঁচাসহ ট্রাকযোগে কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রেরণ করা হয় বাঘিনীকে।

উল্লেখ্য, বাংলাদশে লোকালয়ে চলে আসা বাঘকে ট্রাংঙ্কুলাইজ করে উদ্ধারের এটি দ্বিতীয় ঘটনা ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, ১৬ জানুয়ারি, ২০১২  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।