ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পৌরবর্জ্যে দূষিত হচ্ছে খাগড়াছড়ির পাহাড়-ঝিরি-নদী

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২২
পৌরবর্জ্যে দূষিত হচ্ছে খাগড়াছড়ির পাহাড়-ঝিরি-নদী পৌরবর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পাহাড়।

খাগড়াছড়ি:  খাগড়াছড়ি পৌরসভার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পাহাড়, ঝিরি, নদী। ময়লা বর্জ্যে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ও সড়কে চলাচলকারীরা।

দূষণের কারণে ছড়ার পানিও সংগ্রহ করতে পারছেন না স্থানীয়রা। অভিযোগের পর সমস্যা সমাধান করেননি পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে জানালেন পৌর কর্তৃপক্ষ।

খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখ প্রধান পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলার এই পাহাড়ে দুই দশক ধরে শহরের বাসিন্দাদের পয়োবর্জ্য ও ময়লা আর্বজনার ফেলছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। প্রতিদিন ট্রাকে করে ময়লা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করা হচ্ছে। ময়লা আর্বজনা দূষণে অতিষ্ঠ স্থানীয় গ্রামবাসী ও সড়কে চলাচলকারীরা।   এসব বর্জ্যে আগুন দেওয়ায় দুর্গন্ধযুক্ত ধোয়া চলাচলাকারীদের শরীরের প্রবেশ করছে। বর্জ্যের কারণে দূষিত হচ্ছে পাহাড়, ঝিরি ও ঝরনা। বাধ্য হয়ে অনেককে এসব ঝিরি পানি পান করে অসুস্থ হচ্ছেন। বর্ষায় বৃষ্টির পানি এসব বর্জ্য নদীতে গিয়ে পড়ে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনস্বাস্থ্য।  স্থানীয় বাসিন্দা কল্প রঞ্জন ত্রিপুরা বলেন, বছরের পর বছর পৌরসভা এখানে ময়লা ফেলছে। ময়লার গন্ধে আশপাশের মানুষের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তার ওপর বর্জ্যের আগুনের পোড়া গন্ধ রাত-দিন পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে।  

লক্ষ্মী রানি ত্রিপুরা বলেন, বৃষ্টি হলেই ময়লাগুলো ছড়াতে মিশে যায়। নিচে পাড়ার মানুষ ছড়া থেকে পানি খেতে পারে না। পাহাড়ের নিচে ময়লা ছড়িয়ে যায়। অনেক গন্ধ ছড়ায়। মাছি-মশারও উৎপাত বাড়ে। অনেকবার নিষেধ করলেও তারা শোনে না।

এদিকে পৌরসভার বর্জ্যের কারণে জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ।  খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ বলেন, পচনশীল দ্রব্যগুলো যদি ঠিকমত রিসাইকেলিং করা না হয়ে পানিতে মিশে এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলবে। ডায়রিয়া, টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আর ময়লা পোড়ানোর যে রাত-দিন আগুনে যে ধোয়ার সৃষ্টি হয় তাতে ফুসফুসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই স্বাস্থ্যঝুকিঁ এড়াতে গেলে দূর এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থা করতে হবে।

স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করার কথা জানালেন খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র। ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করে শহরের ময়লা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী স্থানীয়দের দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এতদিন আমাদের স্থায়ী কোন সমাধান ছিল না। এখন খাগড়াছড়ি শহরের সবুজবাগ এলাকায় ১১ একর জায়গায় আমরা স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল্ড স্টেশন করেছি। এর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমরা আশা করছি, সহসা আমরা সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থানান্তর করতে পারবো।

ড্যাম্পিং স্টেশনের কাজ শেষ হওয়ার আগে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কথা চিন্তা করে পৌরসভার বর্জ্য ও ময়লা আর্বজনাগুলো অন্যত্র ফেলার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও  সচেতন নাগরিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।