হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় বৃষ্টিতে দুর্বল হয়ে যাওয়া ছয়টি পাতিসরালির ছানা উদ্ধার করে বন বিভাগ ও স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেনজারড ওয়াইল্ডলাইফ সংগঠনের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (৭ জুন) উপজেলাটির রশিদপুর গ্যাসফিল্ডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) গোলম রব্বানী রনি ছানাগুলোকে তাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেনজারড ওয়াইল্ডলাইফ সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজল হাজরা জানিয়েছেন, গ্যাস ফিল্ডের অতিথি বাংলোর পাশের একটি পানির গর্তে ছয়টি সরালি পাখির ছানা বৃষ্টির কারণে দুর্বল হয়ে গেছিল। গোলাম রব্বানী রনি দেখতে পেয়ে এগুলোকে বাংলোয় এনে রাখেন। তিনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ানোর ও চেষ্টা করেছিলেন। পরে স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেনজারড ওয়াইল্ডলাইফ সংগঠন ও বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি সেগুলোকে হস্তান্তর করেছেন।
কাজল হাজরা আরও বলেন, আনুমানিক ২/৩ দিন বয়সের ছানাগুলোকে আমাদের অস্থায়ী সেবাকেন্দ্রে বন বিভাগের পরামর্শ নিয়ে সেবা দিচ্ছি। সুস্থ হয়ে একটু বড় হলে অবমুক্ত করা হবে।
পাতিসরালির বৈজ্ঞানিক নাম Dendrocygna javanica অর্থাৎ, জাভার বৃক্ষবাসী হাঁস। পাতিসরালি হাঁস এ দেশেরই পাখি। গ্রীষ্মে ছোট ছোট জলাশয়ে বাস করে এবং শীত এলেই হাওর-বাওড়, নদী-বিলে অস্থায়ীভাবে থাকে। শীত ছাড়া অন্য মৌসুমে ওরা ঝাঁক থেকে বের হয়ে নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে একক বা জোড়া হয়ে বিভিন্ন ছোট-বড় জলাশয়, ডোবা, বিল, হাওরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। একত্র না থাকার কারণে তাদের সংখ্যাটা ব্যাপকভাবে চোখে পড়ে না।
বাংলাদেশের বন্য প্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকায় বাংলাদেশে পাখিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত ঘোষণা করেছে। তাদের খাবারের তালিকায় আছে ধানক্ষেতের ছোট ছোট শামুক, জলজ উদ্ভিদ-শ্যাওলা, ছোট মাছ, জলজ পোকামাকড়। এপ্রিল-মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। প্রজনন মৌসুমে এরা মূলত জলাশয়ের ধারে বড় গাছের কোটরে, নারকেলগাছে বাসা বাঁধে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২২
এএটি