হাতিয়া (নোয়াখালী): নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন মৌলভীর চর, চরগাসিয়া, ঢালচর ও জাগলার চরে কয়েক হাজার চিত্রল হরিণ হারিয়ে যাচ্ছে মিঠা পানির অভাবে। কখনওবা মিঠা পানির সন্ধানে লোকালয়ে এসে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ছে হরিণগুলো।
এছাড়াও এসকল চরের প্রায় ১০ হাজার গবাদি পশু ও ৫ হাজার চিত্রল হরিণের জন্য নেই কোনো উঁচু কিল্লার ব্যবস্থা। ফলে বানের জলে ভেসে ও মিঠা পানির অভাবে প্রায়ই মারা যাচ্ছে বনের চিত্রল হরিণসহ শত শত পশু।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, দ্বীপের বিস্তীর্ণ বনে গ্রীস্মকাল এলে নদীতে লবণ পানি দেখা দেয়। তখন মিঠা পানির অভাবে হাহাকার করে ওঠে বনের হরিণ ও গবাদি পশুগুলো।
তারা আরও জানান, সারা চরের মধ্যে মাত্র দু’টি পানির কল রয়েছে। এ দু’টি কলের পানি দিয়ে তারা গরু-মহিষ ও ভেড়াকে পানি পান করান।
বাথান ও গরু-মহিষের মালিকদেরা সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন মাসে হাতিয়ার ঢালচর, জাগলারচর, মৌলভীর চর ও চরগাসিয়ায় মিঠা পানির অভাবে ৮০টির মত গবাদি পশু মারা গেছে।
এছাড়া গত আষাঢ় মাসে উপকূলে বয়ে যাওয়া বন্যায় উঁচু কিল্লার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ৬ হাজার গবাদি পশু ও চিত্রল হরিণ বানের পানিতে ভেসে গেছে।
বন কর্মকর্তা আবুল কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, ‘হতিয়ার পশ্চিমে এসব চরে প্রায় ৫ হাজারের মত হরিণ রয়েছে। মিঠা পানির সন্ধানে প্রায়ই হরিণগুলো লোকালয়ে চলে আসে। মিঠা পানির ব্যবস্থা করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘পানির অভাবে হরিণগুলো দুর্বল হয়ে পড়লে বণ্য কুকুর তাদেরকে ধাওয়া করে খেয়ে ফেলে। আর এবাবেই হারিয়ে যাচ্ছে বনের হরিণ। ’
উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ওয়ালীউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত বছর উপজেলা পরিষদ (ইউপি) থেকে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় মৌলভীর চরে একটি পুকুর ও উঁচু কিল্লা নির্মাণের জন্য আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। কিন্তু বর্ষা চলে আসায় সে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১২