ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনায় আজ শুধু ভালোবাসাবাসির দিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনায় আজ শুধু ভালোবাসাবাসির দিন প্রেম যুগল। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: পৃথিবীর বিশুদ্ধতম অনুভূতি ভালোবাসা। এ নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, পাগলামো, আদিখ্যেতাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাত্রাছাড়া।

সেই যে ভালোবাসার জন্য হাতের মুঠোয় প্রাণ নেওয়া, বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনা ১০৮টি নীলপদ্ম! একবার তাকে দেখতে পাওয়ার নিশ্চয়তা পেলে পৃথিবী সমান দূরত্ব ডিঙানোর সাহস। কিংবা তার একটি ছোট আহ্বানে নষ্ট কষ্ট সব নিমেষে ঝেড়ে-মুছে শব্দের অধিক দ্রুতগতিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দিনটির আনন্দ আয়োজন সবাইকে স্পর্শ করে নিয়ে যায় ভুবন মোহনী স্বর্গে! নগরে দিনটি মহাধুমধামে উদযাপন করছেন তরুণ-তরুণীসহ প্রায় সব বয়সীরা।

বিকেলে শাহবাগের ফুলের দোকানে টায়রা আর গোলাপ ফুল বিক্রির ধুম পড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে দেখা গেছে তরুণ-তরুণীদের ভিড়। সবাই ব্যস্ত ফুল কিনতে; প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সুন্দর সময় কাটাতে। প্রিয়জনকে হৃদয়ের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতেই যেন এত আয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নওশীন জাহান বলেন, বান্ধবীদের নিয়ে ভালোবাসা দিবসে নগরীর বিভিন্ন আকর্ষণীয় জায়গায় ঘুরবো। আজ কোনো সীমা নেই! মন যেদিকে যায় সেদিকেই যাব।

চারুকলার বকুলতলার বসন্ত উৎসবেও দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসার মেলবন্ধন। চারুকলার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ আহমেদ বলেন, ‘ভালোবাসা এবং ফুল যেন একই সূত্রে গাঁথা। পবিত্র এই ভালোবাসার প্রকাশ করতে ফুলের চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে! তাইতো বসন্তের দিনে ফুলের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ’

গোলাপ, ভালোবাসা আর বই যেন একই সূত্রে গাঁথা। প্রিয়জনকে মুখে বলতে না পারা কথাগুলোই লেখকের লেখায় ফুটে ওঠে। লেখক যেন বলে দেন প্রেমিকের হয়ে। সেজন্যই মনে প্রেম এলে আকার ইঙ্গিতে মনের মানুষকে বোঝানোর জন্য প্রেমিক মন খোঁজে বই।

আর যে বইটিতে তার মনের কথা রয়েছে বলে মনে করে, ঠিক সেই বইটিই উপহার দেয় প্রিয়জনকে। তাইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা আর সবশেষে বইমেলায় প্রেমিক যুগলরা ঘুরে বেরিয়েছেন আজ।

মঙ্গলবার বসন্ত উৎসবে মেতে গ্রন্থমেলাকে রাঙিয়ে তুলেছিল তরুণ-তরুণীরা। যেন গ্রন্থমেলা ভাসালো ভালোবাসায়। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে মেলার স্টলগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছিল প্রেমের উপন্যাস, গল্প, কবিতার বই দিয়ে।

শুধু নানা রঙের গোলাপ ফুল আর বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না বইমেলার ভালোবাসা দিবসের আমেজ। মেলায় আসা প্রায় প্রত্যেকেরই সাজে ছিল ভালোবাসার রঙের ছোঁয়া। তরুণীরা পড়েছেন বাসন্তি বা লাল রঙের শাড়ি, খোঁপায় হলুদ গাঁদা, লাল গোলাপ আর হাতে কাঁচের চুড়ি। কেউ বা কপালে পড়েছেন লাল টিপ, গলায় মালা। ভালোবাসার রঙে রঙিন সাজে সজ্জিত তরুণীদের সঙ্গে মানানসই ছিল তরুণরাও। তারাও সেজেছিল ভালোবাসার রঙে। লাল বা বাসন্তি রঙ পাঞ্জাবি, ফতুয়া বা বাহারি রঙের শার্ট ছিল গায়ে।

ভালোবাসা দিবসে মেলায় প্রথমবারের মতো এসেছিলেন সাইফুল ও তার স্ত্রী মীম।

ওই দম্পতি ঢাকার বাইরে থাকেন বলে এবার প্রথম তাদের গ্রন্থমেলায় আসা। তাদের চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস।

সাইফুল বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এলাম বইমেলায়। ওকে কিছু বই কিনে দেবো। মীমের মাথার টায়রা দেখিয়ে বললেন ‘আপাতত টায়রা কিনে দিয়েছি। ও আমাকে এখনও কিছু কিনে দেননি। ’

তারা জানালেন, তারা প্রেমের উপন্যাস ও কবিতার বই কিনবেন।

এদিন মেলায় প্রেমের উপন্যাসের বিক্রি ছিল বেশি। অনুপম প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মিলনকান্তি নাথ বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে অনেকেই আসছেন। এর মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। তারা বেশি নিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বইমেলার পর বিভিন্ন ফাস্টফুড, কফিশপ ও রেস্তোরাঁয় যুগলদের ভিড় ছিল। প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে খাবার শেষ করে আবার বেরিয়ে পড়েছেন ঘুরতে। রাজধানীর নানা শপিংমলের ফুডকোর্টগুলো ছিল প্রেমিক যুগলদের দখলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।