ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

চলছে সাকরাইন, শৈত্যপ্রবাহেও উৎসবের আমেজে কমতি নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
চলছে সাকরাইন, শৈত্যপ্রবাহেও উৎসবের আমেজে কমতি নেই ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: পৌষের বিদায়ক্ষণে সকাল থেকেই শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ ভেদ করে বাহারি রঙের ঘুড়ি উড়তে শুরু করে। রং-বেরঙের ঘুড়িতে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গার আশপাশের আকাশ।

বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে উড়তে থাকে ঘুড়ি। ছাদের পাশাপাশি পুরান ঢাকার বিভিন্ন মাঠেও চলে ঘুড়ি উৎসব।  

পৌষ মাসের শেষ দিন বা পৌষসংক্রান্তি আজ রোববার (১৪ জানুয়ারি)। এ উপলক্ষে এমনই ঘুড়ি উৎসবে মেতে ওঠেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। এটি ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন উৎসব বলে পরিচিত। সাকরাইনে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ঘুড়ি কাটাকাটির খেলা। যদিও এবার শীতসহ বৈরী আবহাওয়া এই আয়োজনে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে।

পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিশু থেকে তরুণ-বৃদ্ধ; সবার হাতেই নাটাই-ঘুড়ি। চলেছে সুতায় মাঞ্জা দেওয়ার কাজ। দিনভর ঘুড়ি ওড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রং-বেরঙের ফানুসে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী নগরের আকাশ।

এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি বাসার ছাদ সাজানো হয়েছে বাহারি রঙের আলোকসজ্জায়। আগের দিন (শনিবার, ১৩ জানুয়ারি) রাত থেকেই উচ্চস্বরে বাজানো হচ্ছে গান। রোববার সন্ধ্যা গড়াতেই ঘুড়ি নেমে শুরু হয়েছে আতশবাজি আর ডিজে পার্টি।

বিকেলে গেন্ডারিয়ায় ধূপখোলা মাঠে ঘুড়ি ওড়ানোর আনন্দে মেতেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তরুণ ব্যবসায়ী নয়ন মিয়া বলেন, বন্ধুরা মিলে দুপুর থেকে ঘুড়ি উড়িয়েছি। সকাল থেকে কুয়াশা ছিল। ভেবেছি বিকেলের দিকে ঠিক হবে। ঠিক হয়নি, সেজন্য প্রতিবার যেভাবে ঘুড়ি কাটাকাটি জমে এবার তেমন জমেনি।

আরেক তরুণ রাজ্জাক বলেন, কুয়াশার কারণে ঘুড়ি দেখা যায় না। কাটাকাটি করতে পারি না। রোদ থাকলে ভালো হতো।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী দুই বন্ধু তাসকিন ও হাসিবুল বলে, তাদের কাছে এই উৎসব অনেক ভালো লাগে। প্রতিবছর পৌষ মাস এলে আনন্দ লাগে। ঘুড়ি ওড়ায়, বন্ধুদের সঙ্গে কাটাকাটি করে ভালোই লাগে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাওন মুন্সি বলেন, সন্ধ্যার পর ঘুড়ি নেমে গেছে। এরপর কিশোর-তরুণদের আয়োজনে গান-বাজনা শুরু হবে। আমরা ছোট থাকতে শুধু ঘুড়ি উড়াতাম। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যেতাম। আমরা কোনো ডিজে করিনি। এখন উৎসবে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

আবু জাফর নামের এক বাসিন্দা বলেন, পুরান ঢাকায় সাকরাইন সবচেয়ে বড় উৎসব। ঘুড়ি ওড়ানোর পাশাপাশি পৌষসংক্রান্তির পিঠা উৎসব করা হয়ে থাকে। এ উৎসবে স্থানীয়রা আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে থাকে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৫টি ওয়ার্ডেই একযোগে এই আয়োজন করা হচ্ছে। সেজন্য কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১৫ হাজার ঘুড়ি বিতরণ করা হয়েছে।

করপোরেশনের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক কমিটির তত্ত্বাবধানে ২০২১ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সাকরাইন উৎসব আয়োজন করে আসছে। করোনার প্রকোপ বাড়ায় ২০২২ সালে আয়োজন করা সম্ভব না হলেও ২০২৩ সালে দ্বিতীয়বাবের মতো করপোরেশনের উদ্যোগে সাকরাইন উৎসব আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৪
এইচএমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।