ঢাকা: টটোরা নামে এক প্রকারের নলখাগড়ার ওপরই গড়ে উঠেছে গ্রাম। ৪ থেকে ৮ ফুট স্তরের নলখাগড়ার ওপরে গড়া গ্রামে বসত ঘর, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, মাছ জিইয়ে রাখার পুকুর।
আন্দিজ পর্বতমালার উচ্চভূমিতে পৃথিবীর সর্বোচ্চ নাব্য হ্রদ টিটিকাকায় এসব গ্রাম ভাসছে শত শত বছর ধরে। পেরু ও বলিভিয়ার মধ্যবর্তী এ হ্রদে এসব গ্রাম এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ।
শুধু গ্রাম নয়, টটোরা পেঁচিয়ে নৌকাও তৈরি করে উরোস আদিবাসীর লোকেরা। জলযুদ্ধে অদক্ষ ইনকাদের আক্রমণের মুখে যারা এভাবে ভাসমান গ্রাম বানিয়ে টিকে থাকার কৌশল নিয়েছিলো সুদূর অতীতে। তারপর থেকে এসব ভাসমান গ্রামই হয়ে উঠেছে তাদের জীবন ও জীবিকা।
তাদের মাছ ধরার ফাঁদ, খেলনা, বাঁশি, মাদুর, তোষক সবই তৈরি হয় টটোরা থেকে। অশিক্ষত আদিবাসী গোষ্ঠীর নিপুন শিল্পকর্ম দেখে বিস্মিত হতে হয়।
৩৮১০ মিটার উচ্চতায় ৮০৮৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের হ্রদ টিটিকাকায় এসব ভাসমান গ্রাম জীবন্ত বিস্ময়ই বটে।
দ্বীপটি এক ধরনের নলখাগড়া জাতীয় ঘাসে কারুকাজ করা, যেটা টোটোরা নামে পরিচিত। এই টোটোরা হ্রদের জলেই জন্মে। উরোস মানুষরা দক্ষতার সঙ্গে এগুলো প্রথমে একসঙ্গে এঁটে বাঁধেন। তারপর সেগুলো কৌশলে ভাসিয়ে রেখে তার ওপরই বছরের পর বছর বসবাস করছেন।
হ্রদের মাঝে তৈরি এই টোটোরা নির্মিত দ্বীপ যেন নড়তে না পারে সেজন্য একটি স্থানে বিশেষ পদ্ধতিতে আবদ্ধ রাখা হয়। তারপর যখন প্রয়োজন হয় তখন এটি নৌকার মতো ভাসিয়ে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই টোটোরা ঘাস অধিবাসীরা ঘর তৈরি, রান্নাবান্নার কজ, মাছ ধরা, আসবাবপত্র তৈরি এবং নানা ধরনের গহনা তৈরির কাজে ব্যবহার করে।
শিল্প কাকে বলে তা যেন এই দ্বীপের বাসিন্দারা দারুণভাবে আয়ত্ত করেছেন। টোটোরা ঘাসের তৈরি অসাধারণ সব নৌকা, গহনা, তৈজসপত্র সেসবের নিদর্শন।
খন পর্যটকরা হ্রদের জল দিয়ে অথবা বলিভিয়ার লা পাজ শহরের এবং পেরুর কাসকো অথবা অ্যারিকুইপা দিয়ে এখানে আসেন। বিমানেও আসা যায়। তবে প্লেন থেকে নেমে আপনাকে এগুতে হবে আরও ৪০ মিনিটরে রাস্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসআই