ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন মির্জাপুর শাহী মসজিদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন মির্জাপুর শাহী মসজিদ

পঞ্চগড়: বাংলাদেশের মুঘল স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পঞ্চগড়ের মির্জাপুর শাহী মসজিদ। প্রায় আড়াইশ’ বছরের পুরনো এই মসজিদটিতে রয়েছে মুঘল স্থাপত্য রীতির সুস্পষ্ট ছাপ।



দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের এই স্থাপনাটি দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে যুগ যুগ ধরে।

আয়তাকার মসজিদের দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২৫ ফুট। গম্বুজ তিনটি।

সামনের দেয়ালে রয়েছে লতাপাতার নকশাখচিত মাঝারি আকৃতির তিনটি দরজা। তিনটি দরজাতেই ছাদ ও দরজার উপরিভাগের মাঝামাঝি স্থানে বাইরের দিকে উভয় পাশে ঢালু তোরণ আকৃতির একটি অতিরিক্ত স্ফীত অংশ সংযুক্ত হওয়ায় অলংঙ্করণ বিন্যাসে সৃষ্টি হয়েছে ভিন্নতা।

মসজিদের মূল ভবনের সামনে রয়েছে একটি আয়াতাকার পাকা অঙ্গন। অঙ্গনের উপরিভাগ উন্মুক্ত। অঙ্গনের বাইরে রয়েছে একটি সুদৃশ্য পাকা তোরণ। তোরণটির নির্মাণ কৌশল অপূর্ব। এতে রয়েছে খিলান করা অন্তঃপ্রবিষ্ট দরজা, উভয় পাশে খাঁজ করা স্তম্ভ এবং ঢাল ও অর্ধ বৃত্তাকার, চ্যাপ্টা, নাতিদীর্ঘ একটি গম্বুজ।
 
মসজিদে ব্যবহৃত ইটগুলো চিকন, রক্তবর্ণ ও অলংঙ্কৃত। কথিত আছে যে, মসজিদের সামনের দেয়ালের ইটগুলো ঘিয়ে ভেজে তৈরি করা হয়েছিল।

মসজিদের মধ্যবর্তী দরজার উপরে ফারসি লিপি খোদিত একটি শিলালিপি রয়েছে। তুঘরা রীতিতে লিখিত শিলালিপিতে বলা আছে, মসজিদটি শাহ্ আলমের রাজত্বকালে নির্মাণ করা হয়।

তবে শিলালিপি থেকে মির্জাপুর শাহী মসজিদের আদি নির্মাতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। মির্জা বংশের অভিমত, মির্জাপুর গ্রামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পূর্বপুরুষ ফুল মোহাম্মদ এই মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। পরে ফুল মোহাম্মদের ভাই দোস্ত মোহাম্মদ সম্ভবত এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এক সময় প্রবল ভূমিকম্পে মসজিদটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রায় দুইশ’ বছর পূর্বে মুলুকউদ্দীন বা মালেকউদ্দীন এই মসজিদের মেরামত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন করেন। তিনি হুগলির মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ইরান থেকে কারিগর এনেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে।

মসজিদের দক্ষিণ পাশে দুটি পাকা কবর রয়েছে। সেখানে নির্মাণকারীদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করা দুই জনকে সমাহিত করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।
 
মির্জাপুর শাহী মসজিদের বর্তমান পরিচালনা কমিটির সদস্য মির্জা নজরুল ইসলাম টুনি বাংলানিউজকে জানান, সাবেক মন্ত্রী ও স্পিকার মির্জা গোলাম হাফিজ বেঁচে থাকতে কয়েক দফায় মসজিদটি সংস্কারের কাজ করেছিলেন। এখন মসজিদ কমিটিই যতটুকু পারছে ততটুকু এর দেখভাল করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।