রাজধানীর এমন বৈরী পরিবেশে প্রশান্তির ডালা মেলে দিয়েছে কৃষ্ণচূড়ার আগুন রঙ। শহরের আকাশে ‘কৃষ্ণচূড়া ভরা যৌবন’ দেখে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত কর্মজীবী মানুষের মনে প্রশান্তির পরশ লেগে যায়।
সময়টা এখন কৃষ্ণচূড়ার। তাই তো, শহর ও গ্রামের প্রকৃতি সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার আগুনমাখা রঙে। রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকা, রমনাপার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ অলিতে-গলিতে সর্বত্র কৃষ্ণচূড়া তার রঙ ভরা চাদর মেলে ধরেছে।
ঢাকার অনেক রাস্তার পাশে রয়েছে কৃষ্ণচূড়া গাছ। কৃত্রিমতায় ভরা এ শহরের দালানের ফাঁক গলে, সৌন্দর্যের মানে তো এটাই! বিশেষ করে সংসদ ভবন এলাকার চারপাশ ঘিরে ফুটেছে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া আর হলুদ সোনালু। কৃষ্ণচূড়া ও সোনালুর এ জগতে বেড়ানোর সবচেয়ে ভালো সময় ভোরবেলা। খুব ভোরবেলা গেলে গাছের তলায় লাল কিংবা হলুদে ঢাকা পাওয়া যাবে রাতের ঝরা ফুলে। বিকেলেও এখানে বেড়াতে আসেন অনেকে। বিশেষ করে যুগলরা।
যুগলরা উজ্জীবিত কণ্ঠে একে অপরের হাতে হাত রেখে বলে ওঠেন, ‘না, থাক, বরং প্রিয়া এসো/ এই কৃষ্ণচূড়ার ঘাসে বসি কিছুক্ষণ/ থাকি আরও কিছুক্ষণ একসাথে...’।
অদূরেই বসে বিরহকাতর যুবক কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে মনে মনে গেয়ে ওঠে কিশোর কুমারের ‘আশা ছিলো,...এই সেই কৃষ্ণচূড়া, যার তলে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ, হাতে হাত কথা যেতো হারিয়ে...’।
কৃষ্ণচূড়া ফুলকে আমরা সাধারণত লাল রঙের ভাবি। কবি-সাহিত্যিকদের লেখাতেও এই লাল রঙের প্রাধ্যান্য। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, কৃষ্ণচূড়া লাল হলুদ ও সাদা- তিন রঙের হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। মূলত আগুন লাল ফুলের জন্য বৈশাখজুড়ে সবার নজর কাড়তে সক্ষম এ ফুল। ইংরেজি ফ্লেম ট্রি নামের এ ফুল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে গুলমোহর নামে পরিচিত। সোনালুর ইংরেজি নাম গোল্ডেন শাওয়ার ফ্লাওয়ার। স্থানীয়ভাবে এ ফুল বানরলাঠি নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এমসি/এএটি/আইএ