নগর জীবনের ব্যস্ততার ঘেরাটোপে বিষয়টিকে সাধারণ ভেবে উড়িয়ে দেবেন যে কেউ! কিন্তু কাহিনী তো সবে শুরু!
চলতে লাগলো গাড়ি।
মূলত এক কালের টেম্পু এখন হয়েছে লেগুনা।
রুবেল হোসেন। বয়স ১০ কী ১২। এখন সে রীতিমতো ড্রাইভার। লেগুনা চালানোর তরিকা অনুযায়ী একদিন বাদে বাদে কাজে নামে সে। এভাবে মাসে ১৫ দিন; বড়জোর ২০ দিন গাড়ি চালানো পড়ে।
‘‘সকাল থেইকা গাড়ি চালাই। হাজার চারেক টেকা আয় হয়। আমার রেট ৮০০; কখনও ৬০০-৭০০ টেকাও নিয়া থাকি। একদিন চালাইলে পরদিন রেস্ট; ওইদিন শুধু ঘুমাই,’’ বাংলানিউজকে রুবেল।
শীর্ণকায় শরীর ও চেহারা। শিশু বদন অধিক পরিশ্রমে হয়েছে তামাটে। এতো খাটুনি সইতে হয় যে কথা কমে গেছে রুবেলের। শিশু শ্রমের বেড়াজালে আটকা এই শিশু সমাজের অন্য আর আট দশটা শিশু শ্রমিকেরই প্রতিচ্ছবি। তার হেল্পারও আট কি নয় বছর বয়সী; নাম রাজু। রাজুর মতে, তার ওস্তাদ খুবই ভালো চালক। দুর্ঘটনার কোনো ভয় নেই তাদের।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭-এর খসড়া অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কম করে অষ্টম শ্রেণি পাসের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গাড়ি চালনার জন্য বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে, তবে পেশাদার চালকদের জন্য ২১।
প্রশ্ন ছিল এতো কম বয়সে চালক হলে, পুলিশে ধরে না? ‘‘মামলাও খাইসি বহু। বেশি ধরা খাইসি মহাখালীর আশপাশে। কী আর হয়; টেকা দিলেই ছাইড়া দেয়। ’’
বাড়ি মিরপুর ৬০ ফিট, পাকা মসজিদ এলাকায়। অভাবের সংসারে হয়নি পড়ালেখা; জানালো পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে যাওয়া। আর গাড়ির লাইনে সে বছর দুই। প্রথম বছরে হেল্পারি করলেও এখন দ্বিতীয় বছরে পাক্কা চালক।
‘‘লেগুনায় সর্বোচ্চ গতি তুলসি ৭০-এর মতো। অনেক জোরে টানতে ভালো লাগে; কিন্তু সব রোডেই তো জ্যাম। তাই আস্তেই চালাই। এখন ঢাকার লেগুনার লাইনে আমরা পোলাপানরাই নেতৃত্বে! ছোট দেইখ্যা পুলিশ ধরলে টেকা দিয়া বাইরাই। ’’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৭
আইএ