কালো চাল আবার অনেক স্থানে বেগুনি চাল (পার্পল রাইস) হিসেবেও পরিচিত। এই চালের পেরিকার্পে যে রঙের ছোপ ধরে তা ঘন কালচে হলেও রান্নার পর এর ভাতের রং হয় গাঢ় বাদামি।
বিশ্বে বিভিন্ন জাতের কালো চাল উৎপন্ন হয়। এগুলোর মধ্যে আঁঠালো জাতের সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। তবে কিছু কিছু জাতে সুগন্ধি যুক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে আমাদের দেশেও এর অল্পবিস্তর চাষাবাদ হচ্ছে। ইস্পাহানী আগমনী ব্ল্যাক রাইস নামে ইস্পাহানী অ্যাগ্রো লিমিটেড ইতোমধ্যে দেশে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে এর উৎপাদন করছে।
জাপানের একদল গবেষক বিভিন্ন জাতের ব্ল্যাক রাইসের উপর গবেষণা চালিয়ে জানান, বিশেষ এক ধরনের জিনের প্রাকৃতিক বিবর্তনের মাধ্যমে চালে প্রচুর পরিমাণের অ্যান্থোসায়ানিন তৈরি হয়। তবে অন্য জাতের ধানের চেয়ে এর ফলন বেশ কম হওয়ায় উৎপাদনের জন্য বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করতে হয়।
প্রাচীন চীনে কালো চাল প্রথম উৎপাদন শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। চীনের লোকেরা মনে করত কালো চাল আয়ু বাড়াতে ও যৌবন ধরে রাখতে ভূমিকা রাখে। তাই চীনের সম্রাট ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিরাই শুধুমাত্র এ চাল নিজেদের দখলে রাখতে পারতো। সাধারণ জনগণের জন্য ব্ল্যাক রাইস ছিলো নিষিদ্ধ।
অ্যান্থোসায়ানিন এন্টিঅক্সিডেন্টস নামক এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি থাকার কারণে এর রং কালো হয়। অ্যান্থোসায়ানিন এন্টিঅক্সিডেন্টস স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। ক্যানসার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়া ব্ল্যাক রাইস উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ এবং ভিটামিন-ই এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মিনারেলও থাকে। বিশেষ করে আয়রন।
সাধারণ চাল রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। অপরদিকে কালো চাল রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। গবেষণায় দেখা যায়, এক চামচ ব্লুবেরিতে যে পরিমাণ অ্যান্থোসায়ানিন থাকে তারচেয়ে বেশি পরিমাণ এক চামচ ব্ল্যাক রাইসে থাকে।
এছাড়াও কালো চাল থেকে তৈরি করা যায় প্রাকৃতিক খাবারের রং। কালো চাল থেকে গোলাপি রঙের নিঃসৃত নির্যাস থেকে তৈরি হয় এ রং। খাবারে কৃত্রিম রং ব্যবহারের বদলে কালো চাল থেকে তৈরি স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক রং সারা বিশ্বে এখন বেশ জনপ্রিয়। পেট ও চামড়ার প্রদাহ এমনকি চামড়ার এলার্জিজনিত ডার্মাটাইটিস প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৭
এনএইচটি/এএ