ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

আজ বাঙালির নববর্ষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
আজ বাঙালির নববর্ষ বর্ষবরণে রমনার বটমূল। ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: বাঙালির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। নতুন করে যাত্রা শুরুর মুহূর্তে সবাই গেয়ে উঠবে, 'তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/ যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,/ অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক/ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।'

রোববার (১৪ এপ্রিল) চির নতুনের ডাক দিয়ে আবার এলো বৈশাখ। বিগত বছরের সব অপূর্ণতা, গ্লানি, ব্যর্থতা মুছে ফেলে জীবনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার আশায় বাঙালি উদ্যাপন করতে যাচ্ছে তার একান্ত আপন নতুন বর্ষ।

আজ বাঙালির নববর্ষ। সব গ্লানি মুছে নবোদ্যমে শুরু হবে পথচলা। বাঙালি স্বাগত জানাবে ১৪২৬ সনকে। শুভেচ্ছা জানাবে- 'শুভ নববর্ষ' বলে।

প্রকৃতির শাশ্বত নিয়মেই পুরাতনের বিদায়ে ঘোষিত হয় নতুনের আগমন। প্রাত্যহিকতার সব জীর্ণ ও পুরাতনকে ফেলে রেখে নবসূর্যের উত্তাপ নিয়ে ১৪২৬ আসুক প্রাণের আশীর্বাদ হয়ে, এমনটাই প্রত্যাশা সকলের। আর সেই প্রত্যাশা করার জায়গাটা থেকেই বাংলা সন বাঙালির নিজস্ব ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। যদিও প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার ব্যবহারিক প্রয়োজন মেটাতে ইংরেজি বর্ষপঞ্জিরই শরণাপন্ন হতে হয়, তবু বাংলা বর্ষপঞ্জির অনুসরণ একেবারে বিলুপ্ত হয়নি বাঙালির জীবন থেকে।

কৃষিনির্ভর এই দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ চাষাবাদ, ঋতুপরিক্রমা অনুসরণ, নানা তিথি-পার্বণ, আচার অনুষ্ঠান পালনের দিনক্ষণ নির্ধারণসহ নানা বাস্তব প্রয়োজনে বাংলা বর্ষপঞ্জিই অনুসরণ করে। তবে এসব দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডকে ছাপিয়ে উৎসবের আয়োজনে বাঙালির নিজস্ব বর্ষ বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়েছে। পহেলা বৈশাখ পরিণত হয়েছে বাঙালির জীবনে সর্ববৃহৎ উৎসবে। সংস্কার, মতাদর্শের মতো সীমাবদ্ধতাগুলো অতিক্রম করে, বৈশাখী উৎসব আজ বাংলা ভাষাভাষী সব মানুষের হৃদয়াবেগ থেকে উৎসারিত এক অতুলনীয় মহোৎসব।

নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীর সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে দিয়েছেন আলাদা বাণী।

নতুন বছরের প্রথম ভোর সেতারের সুর আর তবলার তালে নতুন বছরের আগমনী বার্তা জানায় রাজধানীর রমনা বটমূলে ৷ ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে রাগালাপে শুরু হয় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান৷ ছায়ানটের আয়োজনে প্রভাতি এই আয়োজনে সংগঠনটির প্রায় শ’খানেক শিল্পী গাইবেন মানবতার গান। কথা বলবেন ছায়ানট সভাপতি ড. সনজীদা খাতুন।

সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চ্যানেল আই ও সুরের ধারার যৌথ আয়োজনে 'হাজারও কণ্ঠে বর্ষবরণ' অনুষ্ঠান হবে। ভোর ৬টা থেকে এ আয়োজন চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচি নিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্ব-স্ব উদ্যোগে অনুষ্ঠান হবে।

এছাড়া বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, শিশু একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা, মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব, বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। রাজধানীর পাঁচতারকা সোনারগাঁও হোটেল, র‌্যাডিসন ব্লু, ওয়েস্টিন, ঢাকা রিজেন্সি, খাজানাসহ হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো করেছে বিশেষ আয়োজন। ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাবও করেছে নানা আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
এইচএম/এসআইএস


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।