ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

নতুন ইতিহাস গড়ার পথে বসুন্ধরা কিংস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
নতুন ইতিহাস গড়ার পথে বসুন্ধরা কিংস

বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনে পা রেখেই সব হিসাব-নিকাশ বদলে দিতে শুরু করেছে বসুন্ধরা কিংস। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ক্লাবটি অভিষেকেই হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপা জিতে নতুন দিনের জানান দিয়েছিল।

এবার টানা চতুর্থ শিরোপা জিতে নতুন ইতিহাস গড়তে চলেছে ২০১৮ সালে ঘরোয়া শীর্ষ লিগে যাত্রা শুরু করা দলটি।

স্বাধীন বাংলাদেশে টানা চার লিগ শিরোপা জিততে পারেনি আর কোনও ক্লাব। শুধু স্বাধীন বাংলাদেশে নয়, বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের ইতিহাসেই প্রথমবার টানা চার শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়তে চলেছে কিংস। যদিও ওয়ান্ডার্স ক্লাবের টানা চার শিরোপা জয়ের কথা বলা হয়। তবে এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।  

১৯৪৮ সালে ঘরোয়া প্রথম বিভাগ লিগের যাত্রা শুরু হয়। তখন লিগের নাম ছিল 'ঢাকা সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ'। ওই লিগে প্রথম হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের ইতিহাসও ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবের। ১৯৫৩-৫৬ সালে হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতে তারা।  তবে ১৯৫৫ সালে বন্যার কারণে লিগ বাতিল হয়। তবে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থাকার কারণে ঢাকা ওয়ান্ডার্সকে টানা চার শিরোপা জয়ের দাবিদার বলা হয়। তবে স্বাধীনতার পর এই কীর্তি গড়তে চলেছে কিংস।

স্বাধীনতার পর ১৯৮৩, ৮৪ ও ৮৫ সালে প্রথম হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা আবাহনী। এরপর ঢাকা মোহামেডান ১৯৮৬, ৮৭, ৮৮-৮৯ মৌসুমে অপরাজিত হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের রেকর্ড গড়ে। পেশাদার লিগ শুরুর পরও হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছিল ঢাকা আবাহনী। ২০০৭-০৮, ০৮-০৯, ০৯-১০ মৌসুমে দ্বিতীয়বার হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয় আবাহনী। তবে সব ক্লাবকে পেছনে ফেলে স্বাধীন বাংলাদেশে নতুন ইতিহাস গড়েছে বসুন্ধরা কিংস। তাদের আগে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি কোনও ক্লাবই।

কিংসের আগমনের পর পেশাদার ফুটবলে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। আগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে লিগ সীমাবদ্ধ থাকলেও, আবির্ভাবের পরই বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে নীলফামারীতে বসুন্ধরা কিংস হোম ভেন্যু তৈরি করেছে। বাফুফে এখন বিভিন্ন জেলায় লিগ আয়োজন করছে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা নিজস্ব ভেন্যু হওয়ায় ঘরোয়া ফুটবলে হারানো জৌলুস ফিরিয়ে এনেছে বসুন্ধরা। ঘরোয়া ফুটবলে দর্শক খরা কাটানোর পেছনে ক্লাবটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। কারণ কিংস অ্যারেনায় প্রতিটি ম্যাচে দর্শক উপচে পড়ে। কোনো ক্লাবের নিজস্ব ভেন্যু- এটাও আরেক ইতিহাস।

৭৫ বছরের ইতিহাসে কিংসই প্রথম দল যারা অভিষেকেই লিগ ও স্বাধীনতা কাপ দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।  লিগ ছাড়াও ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপে দুবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলে অনেক দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও নতুন রেকর্ড গড়েছে কিংসই। তারা শুরু থেকে লিগের প্রথম পর্বের শীর্ষে রয়েছে। ওয়ান্ডারার্স, আবাহনী ও মোহামেডান হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হলেও এক কোচের অধীনে হয়নি। কিংসই তা পেরেছে। স্পেনের কোচ অস্কার ব্রুজোন শুরু থেকেই দায়িত্ব পেয়ে দলকে উপহার দিয়েছেন সাত শিরোপা।  

শুধু পুরুষ ফুটবলেই নয়, নারী ফুটবলেও বসুন্ধরার সাফল্য ঈর্ষনীয়। নারী লিগে বসুন্ধরা কিংস যে সাফল্য অর্জন করেছে তা এশিয়ার কোনো ক্লাবই পারেনি। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন তো হয়েছেই, টানা তিন আসরে কোনো পয়েন্টও হারায়নি তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।