ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

তীর্থের কাপ যাবে ‘ফুটবল ঈশ্বর’ এর দেশে!

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৪
তীর্থের কাপ যাবে ‘ফুটবল ঈশ্বর’ এর দেশে!

ঢাকা: সময়টা ১৯৮৬ সাল। ছোট খাটো গড়নের টগবগে ২৬ বছরের এক তরুণ।

বিশ্ব আসরে পুরো পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিলেন। একক দক্ষতায় দেশকে এনে দিলেন বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার বিশ্বকাপ ট্রফি।

গড়ে দিলেন আধুনিক ফুটবলে নান্দনিকতার স্থায়ী ভিত্তি। বনে গেলেন নিজ দেশে ফুটবল ঈশ্বর! তিনি আর কেউ নয়, আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বর দিয়োগো মারাডোনা।
 
এরপর একে একে পার হয়েছে ২৮ বছর। বিশ্ব দেখেছে আরও ৬টি বিশ্বকাপ। ফুটবল ঈশ্বরের দেশে জন্ম নিয়েছে অনেক সুপার স্টার। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে দেশটির আর বিশ্বকাপ ট্রফির স্বাদ নেওয়া হয়নি।



প্রতিবারই বিশ্ব আসরে আর্জেন্টিনা ফেভারিট হিসেবে এলেও নিজেরা খেলেছে, খেলিয়েছে অন্যদেরও। কিন্তু বিদায় নিতে হয়েছে খালি হাতে!
 
বিভিন্ন দেশ ঘুরে এবার (২০১৪) ফুটবল ফিরেছে ফুটবলের তীর্থভূমি ব্রাজিলে। তীর্থভূমিতে ইতোমধ্যে হয়ে গেছে গ্রুপ পর্বের ১৯টি খেলা।
প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে বর্তমানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে। প্রথম পর্ব থেকে আরও এক সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের (ইংল্যান্ড অথবা উরুগুয়ে) বিদায় নিশ্চিত।
 
বারবার ব্যর্থ! এরপরও বিশ্ব আসরে হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা। তাই ঘটন অঘটনের যত জটিল সমীকরণই হোক এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

শিরোপার অন্যতম দাবিদার হিসেবেই বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করছে আর্জেন্টিনা। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ আর্জেন্টিনা দুর্বল বসনিয়া ও ইরানের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছে তাতে হট ফেভারিটের কোনো ছায়া দেখা যায়নি।
 
তারপরও মেসি গোল পাওয়ার কারণে স্বপ্নে বিভোর আর্জেন্টিনার ফুটবল ভক্ত ও সমর্থকরা। তাদের বিশ্বাস গত ৬টি বিশ্বকাপের খরা এবার তাদের ঘুচিয়ে দেবেন ২৬ বছরের চার তরুণ লিয়নেল মেসি, গঞ্জালো হিগুয়েইন, সার্জিও আগুয়েরো এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।

যেমনটি ১৯৮৬ সালে করেছিলেন ২৬ বছরের তরুণ দিয়োগো মারাডোনা।
 
এবার চার স্বপ্ন সারথির মধ্যে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা লিয়নেল মেসি প্রথম দুই ম্যাচেই দেখিয়েছেন নিজের ঝলক। দুই ম্যাচেই প্রয়োজনের সময় করেছেন একটি করে দুটি নান্দনিক গোল।

আর দলকে এনে দিয়েছেন জয়। সঙ্গে যারা বলেন মেসি দেশের না ক্লাবের, সেই সমালোচকদেরও জবাব দিয়ে দিয়েছেন তিনি।
 
তাই দলের অপর তিন সুপার স্টার গঞ্জালো হিগুয়েইন, সার্জিও আগুয়েরো এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এখনো আলো ছড়াতে না পারলেও আশা ছাড়ছেন না দেশটির ফুটবলের ভক্ত সমর্থকরা।

তাদের প্রত্যাশা নক আউট পর্বে জ্বলে উঠবেন এই তিন স্বপ্ন সারথি। তারা ফুটবলের তীর্থে দেখাবেন দুর্দান্ত খেলা, আর কাপ নিয়ে ফিরবেন ফুটবল ঈশ্বরের (দিয়োগো মারাডোনা) দেশে।
 
আর্জেন্টিনার সমর্থক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-এর ছাত্র সজিব বলেন, ব্রাজিল ফুটবলের দেশ ঠিক আছে। তাই বলে ব্রাজিলই কাপ নেবে এমনটি ভাবা দুঃস্বপ্ন দেখার মতো হবে। ব্রাজিল যত ভালোই খেলুক তাদের সর্বোচ্চ দৌড় হবে সেমি ফাইনাল পর্যন্ত! 
 
তিনি বলেন, শিরোপার দাবিদার ইউরোপের দুই শক্তি জার্মানি ও নেদারল্যান্ডও এবার ব্যর্থ হতে পারে। কারণ জার্মানি ও নেদারল্যান্ড প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত গতিতে খেলে বিপক্ষ দলকে গোল বন্যায় ভাসিয়েছে সত্য। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই দু’দল হারিয়ে ফেলে প্রথম ম্যাচের গতি। জয় পেলেও নেদারল্যান্ড খেলেছে অতি সাধারণ মানের খেলা। আর হারতে হারতে কোনো রকমে ড্র করেছে জার্মানি। তাই বলতেই হচ্ছে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টফিতে চুমু খাবে মেসিরা।
 
আর্জেন্টিনার আর এক সমর্থক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র  রুবেল হাসান। তারও আশা এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ জিতবে আর্জেন্টিনা। তার মতে, বিশ্বকাপে দর্শক ও ভক্তদের মনমত খেলতে পারবেন না ব্রাজিলের সুপার স্টার নেইমার। তাই শেষমেষ শিরোপা স্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে দেশটি।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী একটু সুরেলা ভঙ্গিতে বলেন, খেলা হবে তীর্থে। জয় হবে নান্দনিকতার। শিল্পের কাছে হারবে পেশি শক্তি। সৌরভ ছড়াবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। তাকিয়ে দেখবে তীর্থবাসীরা, কাপ হাতে দেশে ফিরছে ঈশ্বরের উত্তরসূরীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।