ঢাকা: ফুটবলে এক মৌসুম শেষ হওয়ার পরই শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলো ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দেওয়া পছন্দের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আলোচনাও করে। তবে আগাম চুক্তি করা যায় না।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে হোটেলে যা ঘটেছে তা সত্যিই নিন্দাদায়ক।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সেমিফাইনালে বাহরাইনের কাছে হারার পর এমনিতেই ফুটবলাররা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ম্যাচ শেষে কারো কারো চোখে অশ্রুও দেখা যায়। অথচ হোটেলে পৌঁছাতে না পৌঁছাতে তারা অদ্ভুত পরিস্থিতির শিকার হলেন।
অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের রুমে ঢুকেন শেখ জামালের কর্মকর্তা ইকবাল কবির খোকন। ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেনের দাবি, অস্ত্র নিয়ে মামুনুলদের তুলে নিতে এসেছিলেন এই কর্মকর্তাসহ একদল লোক। ঘটনার পরপরই হোস্টেলে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে হোটেলে ফুটবলাররা ভয় পেয়ে যান।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সোমবার রাতে ইলিয়াস হোসেন সাংবাদিকদের জানান। কারও অনুমতি ছাড়াই একজন অস্ত্রধারী মামুনুলের রুমে প্রবেশ করেন। পরিচয় জানতে চাইলে উল্টো সে আমার পরিচয় জানতে চায় এবং বলে বাফুফে সভাপতির অনুমতি নিয়েই তিনি এসেছেন। পরে সালাউদ্দিনের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয় যে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে বের করে দেওয়া হয়।
ইলিয়াস জানান, তিনি এসেছিলেন শেখ জামালের খেলোয়াড়দের রাতেই নিয়ে যেতে। গতকাল পুলিশ প্রহরায় খেলোয়াড়দের বাফুফে ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ফুটবলার বলেন, ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি বলে দর্শকরা আমাদের তিরস্কৃত করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কি মানসিক চাপে আমরা টুর্নামেন্ট খেলেছি তাতো কেউ জানেন না। আমাদের আগে থেকেই হুমকি দিয়ে বলা হয়েছিল যদি অন্য দলে যোগ দিই তাহলে দেখে নেওয়া হবে। পরে ১১ জন ফুটবলার যার যার গন্তব্য চলে চান।
জানা গেছে, শেখ জামালের অধিকাংশ ফুটবলারকে এবার শেখ রাসেল, চট্টগ্রাম আবাহনী ও ঢাকা আবাহনীতে দেখা যাবে। বুধবার (২০ জানুয়ারি) থেকে বাফুফে রেজিস্ট্রেশন ফরম ছাড়বে। যারা যে দলের পক্ষে হয়ে ফরমে স্বাক্ষর করবেন তারাই নতুন মৌসুমে সেই দলের হয়ে খেলবেন। মানুসুল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কোনো অবস্থায় শেখ জামালে খেলবেন না। এএফসি কাপ খেলতে পারেন তবে অতিথি খেলোয়াড় হিসেবে।
শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের পরিচালক (ক্রীড়া) সালেহজামান বলেন, দলবদলে নিয়ে উত্তেজনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্ত্র দিয়ে খেলোয়াড়দের ভয় দেখানো মানা যায় না। আমার বিশ্বাস বিষয়টি অবশ্যই বাফুফে তদন্ত করবে। শেখ জামালের ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু এ ব্যাপারে কথাই বলতে চাননি।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, আসলে ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তবে যা শুনছি তা খেলাধুলায় কাম্য নয়। এদিকে ফুটবলার যার যার গন্তব্য ফিরে গেলেও আতঙ্ক কাটছে না। কখন কি ঘটে যায় এগিয়ে সবাই ভয়ের মধ্যে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
জেডএস