ঢাকা, সোমবার, ১২ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

ফিনিশিং ব্যর্থতাই পরাজয়ের কারণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৬
ফিনিশিং ব্যর্থতাই পরাজয়ের কারণ

ঢাকা: আক্রমণ ভাগের ফিনিশিং ব্যর্থতাই তাজিকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের প্রধান কারণ বলে মনে করেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম।

বেশ কয়েকটি ধারালো আক্রমণ রচনা করেও শেষটা দক্ষতার সাথে করতে না পারায় এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্লে-অফ ম্যাচে ঘরের মাঠে পরাজিত হতে হয়েছে বলে অভিমত দেন লাল-সবুজের অধিনায়ক।

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্লে অফের অ্যাওয়ে ম্যাচে ৫-০ তে হারের পর ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলের ব্যবধানে হেরে এশিয়ান কাপে খেলা একরকম কঠিন করে তুলেছে বাংলাদেশ দল।

এশিয়ান কাপে খেলতে আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে লড়বে বাংলাদেশ, যেখানে জয়ের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মামুনুলের মতে অ্যাওয়ে ম্যাচ সব সময়ই কঠিন হয়। ফলে বিদেশের মাটিতে গিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনা তুলনামূলক কঠিন। পক্ষান্তরে হোম ম্যাচ বা ঘরের মাঠে জয় তুলে নেওয়ার কাজটি তুলনামূলক সহজ হলেও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে সেই কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করেন দেশ সেরা এই মিডফিল্ডার।

তবে মামুনুল বিশ্বাস করেন যে অ্যাওয়ে ম্যাচের চাইতে ফিরতি লেগে হোম ম্যাচে তার দল অনেক বেশি উজ্জ্বল ছিল। ভিন্নতা ছিল নিজেদের খেলার ধরনেও।

‘ঘরের মাঠে সবাই ভালো খেলে। কিন্তু অ্যাওয়ে ম্যাচটি সবার জন্যই কঠিন হয়। প্রথম ম্যাচের চাইতে দ্বিতীয় ম্যাচে আমাদের দলের দিকে তাকালে দেখবেন আমরা কতটা ভালো করেছি। খেলার ধরন অনেক বদেলেছে। আমরা এই ম্যাচটি জিততেও পারতাম শুধু ফিনিশিংয়ের অভাবে পারিনি। ভালো ফিনিশ হলে ম্যাচের চেহারাই পাল্টে যেত। ওরা একটি সুযোগ পেয়েছে যা নিশ্চিত করে গোল তুলে নিয়েছে। ’

মঙ্গলবার (০৭ জুন) প্রথমার্ধের ৮ মিনিটে তাজিকদের দেওয়া গোলটি হজম করেই খেলায় ফিরতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। গোল শোধে মরিয়া স্বাগতিকদের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় নাবিব নেওয়াজ জীবন প্রথমার্ধের ১৯ ও ৩২ মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন।

শুধু জীবনই নয়, ৪২ মিনিটে জালে বল জড়াতে চেয়েছিলেন সোহেল রানাও কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হয়েছেন ফিনিশিং দুর্বলতার কারণে। প্রথমার্ধের ধারাবাহিতকতকায় দ্বিতীয়ার্ধেও আরও বেশ কয়েকটি জোড়ালো আক্রমণ রচনা করেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলদেশের আক্রমণ ভাগ।

কীভাবে আক্রমণ ভাগ ফিনিশিং দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল বলেন, নাবিব নেওয়াজ জীবন ও জুয়েল রানার মতো তরুণ স্ট্রাইকারদের ক্লাব টিমে বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে হবে। তারা ক্লাব টিমে ম্যাচ খেললে তাদের ফিনিশিং সমস্যা হবে না। ঘরোয়া টিমে না খেলে হুট করেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললে এই সমস্যা দেখা দেয়। এতে অবশ্য দোষ প্লেয়ার বা ক্লাব কারোরই নয়। কেননা ক্লাবগুলো চায় বিদেশি আক্রমণ ভাগের প্লেয়ার নিয়ে দল সাজাতে। নেওয়াজ বা রনির সুযোগ আছে ঢাকা আবাহনী বা শেখ রাসেলে খেলার। তারা এই সুযোগ পেলে আমি মনে করি জাতীয় দলকে বেশ ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।

গেল বছর থেকে শুরু করে এ বছরের পুরো সময়টাই বলতে গেলে বাংলাদেশ ফুটবল দল এশিয়ার বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলেছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়া, তাজিকিস্তান, জর্ডান, কিরগিজস্তানের মতো এশিয়ার শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে হয়েছে মামুনুলদের।

যদিও গেল বছরের শেষ দিকে সাফে অংশ নিংলেও ফলাফল ছিল হতাশাব্যঞ্জক। তবুও লাল-সবুজের অধিনায়কের মতে এই মুহূর্তে উপমহাদেশের দলগুলোর সঙ্গে ম্যাচ খেললে নিজেদের জন্য কল্যাণকর হতো বলে মনে করেন তিনি।

মামুনুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলে আসছি। এখন যদি আমরা উপ-মহাদেশের কোনো দলের সাথে খেলি তাহলে আমাদের ফলাফল ভালো হবে বলে আশা করা যায়। ’

আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্লে অফে ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ দুটো জিততে এখনই দলের সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে বলললেন বাংলাদেশ দলের দলপতি।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশা অবশ্যই জয়ের। কেননা এখন আর কথা বলার সুযোগ নেই। কী করলে কী হবে এটা দেখারও সুযোগ নেই। এখন মাঠে নেমে জয়ই প্রথম ও শেষ কথা। আর সেটা হলেই আমরা এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবো। ’

সব শেষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো সমস্যাই আর আমাদের দেখানোর সুযোগ নেই। কেননা ফেডারেশন আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করছে। এখন আমাদের সময় হয়েছে ফেডারেশনকে কিছু দেওয়ার। ভুটানের বিপক্ষে কিছু করতে না পারলে সেটা হবে আমাদের ফুটবলারদেরই ব্যর্থতা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৬
এইচএল/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।