ঢাকা: পর্তুগালকে ‘ঐতিহাসিক’ শিরোপা এনে দিতে আর মাত্র একটি জয় দূরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে ইউরোর ফাইনাল সামনে রেখে তার সামনে থাকছে বেশ কয়েকটি রেকর্ড ছোঁয়ার হাতছানি!
রোববার (১০ জুলাই) শিরোপা লড়াইয়ে পগবা-পায়েত-মাতুইদি-জিরুদ-গ্রিজম্যানদের মুখোমুখি হবে রোনালদোর পর্তুগাল।
ইতোমধ্যেই কয়েকটি ব্যক্তিগত অর্জন নিজের করে নিয়েছেন রোনালদো। সুযোগ থাকছে প্রাপ্তির খাতাটা আরো পরিপূর্ণ করার। আবার একটি রেকর্ড হাতছাড়াও করতে যাচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। পাঠকদের জন্য সব বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
যা অর্জন করে ফেলেছেন:
১. ২০১৬ ইউরোতে এখন পর্যন্ত তিনটি গোল করে বাছাইপর্ব ও মূলপর্ব মিলিয়ে নিজের গোল সংখ্যাটা আরো বাড়িয়ে নিয়েছেন রোনালদো। ৪৭ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছেন ২৯ বার। সুইডিশ আইকন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের চেয়ে চারটি বেশি।
২. সেমিফাইনালে ওয়েলসের বিপক্ষে গোল করার মধ্য দিয়ে ইউরোর সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা মিশেল প্লাতিনির (৯) রেকর্ড স্পর্শ করেন রোনালদো। সবচেয়ে বেশি সাতটি ম্যাচে গোল করার কীর্তিও গড়েন তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা।
৩. প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোর চারটি ভিন্ন আসরে গোল করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ২০০৪ ইউরোতে দু’টি, ২০০৮ আসরে একটি আর ২০১২ ও ২০১৬ ইভেন্টে তিনটি করে। এবারের ফাইনাল তো এখনো বাকি। রোনালদোই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের চারটি ভিন্ন আসরে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন।
৪. ইউরোতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটাও এখন রোনালদোর দখলে। ২০ ম্যাচে তিনি ১,৭৬৮ মিনিট মাঠে ছিলেন যেটিও অন্য সবার চেয়ে বেশি।
ফাইনালে যা অর্জন করতে যাচ্ছেন:
১. ফ্রান্সের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পা রাখলেই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১২ বছরে দু’টি ইউরোর ফাইনাল খেলার কীর্তি গড়বেন রোনালদো। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রিকার্ডো কারভালহো মাঠে নামলে তিনিও স্বদেশীর পাশে নাম লেখাবেন।
২. তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ইউরো তিনটি ভিন্ন ইভেন্টের সেরা টিমে থাকতে পারেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোনালদো। লরা ব্লাঁ (১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০০) ও পাওলো মালদিনি (১৯৮৮, ১৯৯৬, ২০০০) এ দু’জনই এমন অর্জনের মালিক।
শিরোপা নির্ধারণীতে যা অর্জন করতে পারেন:
১. ফাইনালের মঞ্চে একটি গোল করতেই পারলেই মিশেল প্লাতিনির ৯ গোলের রেকর্ড টপকে যাবেন রোনালদো। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের (ইউরো) নতুন টপস্কোরার দেখবে ফুটবল বিশ্ব।
২. সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হয়ে ইউরোর ফাইনালে গোল করার মাইলফলক ছোঁয়াটাও রোনালদোর দৃষ্টিসীমায়। বর্তমানে যেটি বার্নড হোলজেনবেইনের দখলে, যিনি ১৯৭৬ আসরের ফাইনালে ত্রিশ বছর বয়সে গোল উদযাপন করেছিলেন। ৩১ বছর বয়সী রোনালদো তা ভেঙে দিতে পারেন।
৩. ১১তম খেলোয়াড় হিসেবে একই বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরো জেতার দ্বারপ্রান্তে পর্তুগিজ অধিনায়ক। রোনালদোর পাশাপাশি সেন্টার ব্যাক পেপে সামনেও থাকছে অনন্য এ তালিকায় নাম লেখানোর।
বর্তমানে এ তালিকায় আছেন লুইস সুয়ারেজ (১৯৬৪ সালে ইন্টার মিলান ও স্পেনের হয়ে), হ্যানস ফন ব্রুকলিন, রোনাল্ড কোম্যান, উইম কিয়েফট, বেরি ফন আরলে, জেরাল্ড ভানেনবার্গ (পাঁচজনই পিএসভি ও নেদারল্যান্ডসের হয়ে ১৯৮৮ তে), নিকোলাস আনেল্কা ও ক্রিস্টিয়ান কারেম্বু (রিয়াল মাদ্রিদ ও ফ্রান্স, ২০০০), ফার্নান্দো তোরেস ও হুয়ান মাতা (চেলসি ও স্পেন, ২০১২)।
এদিকে, স্বদেশী বিস্ময় বালক রেনাতো সানচেজের কাছে ১২ বছরের রেকর্ড হাতছাড়া করতে যাচ্ছেন রোনালদো। সর্বনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোর ফাইনাল খেলার মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায় উদীয়মান এ মিডফিল্ডার। যার বয়স এখন ১৮ বছর ৩২৭ দিন। ঘরের মাঠে গ্রিসের বিপক্ষে স্বপ্নভঙ্গের ফাইনালে রোনালদোর বয়স ছিল ১৯ বছর ১৫০ দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৬
এমআরএম
** ঐতিহাসিক শিরোপার দ্বারপ্রান্তে রোনালদো