সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন জানান, ‘বাংলাদেশের মতো ফুটবল পাগল দেশে প্রতিটি ভক্তই তাদের দেশকে বিশ্ব ফুটবলের উচ্চতম পর্যায়ে খেলতে দেখতে চায়। ভবিষ্যতের লক্ষ্য হিসেবে জাতীয় নারী দলকে মঞ্চে নিয়ে যেতে চাই।
তিনি আরও জানান, ‘অন্যান্য লক্ষ্যের মধ্যে খেলোয়াড়দের শারীরিক, মানসিক, টেকনিকাল দিক সহ সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য নানা প্রোগ্রাম আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনূর্ধ্ব-২০ দলের ২০১৮ ও ২০২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব পেরোনো এবং ২০১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো ফলাফলকেই ভবিষ্যত লক্ষ্য মেনে এগোবো আমরা। ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬ এবং ১৯ পর্যায়ের প্রতিভাবান ফুটবলারদের ঠিকভাবে গড়ে তোলা আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আমরা তাদের সাফ এবং অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬, ১৯ এবং ২৩ পর্যায়ে ভালো ফলাফল করতে দেখতে চাই। ’
সংবাদ সম্মেলনে এলিট রেফারি ডেভেলপমেন্ট এবং কোচ এডুকেশন নিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘ফুটবল উন্নয়নের জন্য পূর্বঘোষিত আটটি ডেভেলপমেন্ট পিলারের আওতায় বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি আমরা। এর অংশ হিসেবে রেফারি এবং কোচদের জন্য কার্যক্রম আয়োজন করা হচ্ছে। গত ৪ থেকে ৮ ডিসেম্বর ফিফা অফিসিয়াল ইসমাইল আদনান আলহাফির তত্ত্বাবধানে এলিট রেফারি কোর্স আয়োজন করা হয়। দুই জন নারীসহ মোট ৪০ জন রেফারি এতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া এই ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় কোচদের জন্য প্রাথমিকভাবে ক্লাস এ, বি এবং সি- এই তিন লেভেলের কোর্স আয়োজন করা হবে। এ ধরনের ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ফুটবল কোচিং সার্টিফিকেট রিভ্যালিডেশনের পাশাপাশি স্থানীয় কোচরা নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধি করারও সুযোগ পাবেন। ’
তিনি আরও জানান, ‘২০১৭ সাল জুড়েই সর্বস্তরের ফুটবলে কোচিং কোর্সের জন্য একের পর এক কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে। সব পর্যায়ে কোচদের গুণগত মান উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগের উপর আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। শিক্ষিত ও দক্ষ কোচদের মাধ্যমে আরো ভালো মানের খেলোয়াড় তৈরি করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। ’
অনূর্ধ্ব-১৫ দলটির প্রতিভা প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বাফুফে প্রেসিডেন্ট জানান, ‘তৃণমূলে অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের জন্যে আমাদের কোচেরা ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলাগুলোতে কাজ শুরু করেছেন। তৃণমূলে ফুটবল উন্নয়নে এই কোচেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশিক্ষণে দেশজুড়ে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। তাদের নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্যেই আমরা এই পর্যায়ের প্রতিবাভান খেলোয়াড় শনাক্ত করতে পেরেছি।
ক্লাব লাইসেন্সিং ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘ক্লাব লাইসেন্সিং নীতিমালাগুলো আরো সুস্পষ্ট করার লক্ষ্যে আমরা বিপিএল ও বিসিএল-এ অংশগ্রহণ করা ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। এই ওয়ার্কশপে এ মৌসুমের ফিডব্যাকের পাশাপাশি আগামী ২০১৭-১৮ সিজনের জন্যও ক্লাবগুলোর কাছ থেকে মতামত নেয়া হচ্ছে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন-এর ক্লাব লাইসেন্স নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাফুফের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই ওয়ার্কশপটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ক্লাব লাইসেন্সিং এর ব্যাপারে এফসিএর থেকে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং ২০১৮ সালের মধ্যে সব ক্লাবকেই সে অনুযায়ী নিজেদের অবকাঠামো গড়ে তুলতে বলা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাফুফে দেশের ক্লাবগুলোর সঙ্গে একসাথে কাজ করবে। ’
‘সামনে যতই বাধা আসুক না কেনো, আমরা পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে যাব না। উপযুক্ত পরিবেশে সেরা কোচিং সুবিধার মাধ্যমে ভালোমানের খেলোয়াড় তৈরি করা আমদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। ফুটবল উন্নয়নের তৃতীয় পর্যায়ে পরবর্তী প্রজন্মের খেলোয়াড় এবং কোচ তৈরি করার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। ’ জানান সালাউদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৪ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭
এমআরপি