শনিবার প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবের কাছে ঢাকা আবাহনীর ১-০ গোলে হারার পর রোববার একই পথ ধরল মোহামেডানও। তাদের হারটা আরও বড়।
এদিন বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হয় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে। শুরু থেকেই দু দলই ঢিলেঢালাভাবে শুরু করে। খেলার বয়স যখন ১৪ মিনিট তখনই বড় সুযোগ তৈরি করে নেপালের মানাং মারসিয়ংদি ক্লাব। ডানপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে পড়া বিপদজনক মারসিয়ংদির মিডফিল্ডার বিশাল রায়ের শট ছোট বক্স থেকে মোডামেডানের ডিফেন্ডার এলিটা বেনজামিন কর্নারের বিনিময়ে গোলবঞ্চিত করেন। এরপরেই দুই পক্ষই আক্রামণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে। এর মধ্যে ৩১ মিনিটে আবারও আক্রমনে যায় মারসিয়ংদি। তাদের ফরোয়ার্ড স্যামসন কয়েকজনকে কাটিয়ে একক প্রচেষ্টায় ঢুকে পড়েন মোডামেডানের বিপদসীমানায়। তারপর ডানপ্রান্ত থেকে যে লবটি নেন তা মোডামেডানের ডিফেন্ডার কামারার কাধে লেগে কিছুটা বাক খেয়ে চলে যায় মোডামেডানের বামবারের একেবারে কাছাকাছি। সেখানে গোলকিপার দুর্দান্ত প্রচেষ্টায় মোহামেডানের গোলকিপার মামুন কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন।
এর তিন মিনিটের মাথায় মোডামেডান পাল্টা আক্রমণে যায়। বিশ্বনাথ ঘোষের লব থেকে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে দলীয় অধিনায়ক সবুজ শট নেবেন-ওই মুহূর্তেই আদমা সিসোকা ক্লিয়ার করেন। ৪২মিনিটে আবারও সুযোগ তৈরি হয় মোডামেডানের সামনে। বামপ্রান্ত থেকে ফরোয়ার্ড দাওডা সেসের বাড়ানো বল থেকে সজিবের নেওয়া দুর্দান্ত শটটি সাইডবারে লেগে পুনরায় ফেরত আসে দাওডা সেসের কাছে। কিন্তু তার নেওয়া শটটি ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে প্রথম ৪৫ মিনিট গোলশূন্যই কাটে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে মোহামেডান। ছোট ছোট পাস থেকে বড় আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে আব্দুল কাইয়ুম সেন্টুর দল। কিন্তু উল্টো গোল খেয়ে বসে তারা। তাও মোহামেডানের আক্রমণ থেকেই বল পেয়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ।
তখন ৫৪ মিনিট। মোহামেডানের ডিফেন্ডার এলিটা বেনজামিন প্রতিপক্ষের ডি বক্সে বল ফেলতে গিয়ে উল্টো বল পেয়ে যান মারসিয়ংদির ফরোয়ার্ড ওলাদিপো। তিনি বল নিয়ে তীব্রতায় একক প্রচেষ্টায় মোহোমেডানের বক্সে ঢুকে পড়েন। এ সময় মোহামেডানের গোলকিপার সামনে এগিয়ে আসলে তিনি হালকা টোকায় বল তুলে দেন তার মাথার উপর দিয়ে। এতে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় মারসিয়ংদি।
ম্যাচের শেষের দিকে মোহামেডান ডিফেন্সিভ খেলার চেষ্টা করে। এই সুযোগইটিই কাজে লাগায় মারসিয়ংদি। ৮৭ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে ওলাডিপোর থ্রু পাস থেকে বিশাল রায়ের নেওয়া শটটি জায়গা নেয় মোহামেডানের জালে। এতে আবারও এগিয়ে গেল মারসিংদি। ম্যাচের শেষ কয়েকমিনিট চেষ্টা করলেও গোল পরিশোধ করতে পারেনি মোহামেডান। ফলে ২-০ গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে নেপালের জাতীয় দলের হয়ে খেলা ৮ ফুটবলারকে নিয়ে মাঠে নামা মারসিয়ংদি।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মোহামেডানের কোচ আব্দুল কাইয়ুম সেন্টু তার দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি সংকট ও ফিটনেসের অভাবকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, আমার দলটি নতুনভাবে সাজানো। এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য কয়েকটি ক্লাবের বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। যারা খেলেছে তারা তাদের প্রত্যাশামতো খেলতে পারেনি। আশা করছি পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আমরা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারবো। ’
নেপালের মানাং মারসিয়ংদি কোচ সিরিং লোপচাঙ গুরুং বলেন, ‘আমরা জানতাম বড় দলের বিপক্ষে খেলতে হবে। সেভাবে আমাদের প্রস্তুতি ছিল। আমরা নেপাল জাতীয় দলের ৮ খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নেমেছি। আমরা আমাদের প্রত্যাশামতো খেলতে পেরেছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
টিএইচ/টিসি