ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু চট্টগ্রাম আবাহনীর

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু চট্টগ্রাম আবাহনীর চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু চট্টগ্রাম আবাহনীর। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এমএ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে: চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখেই বড় পর্দায় এই অঞ্চলের ভাষায় লেখা একটি স্লোগান চোখে পড়ে-খেলা এবার গরম চলের (খেলা এবার গরম চলছে)। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে মাঠে সেই কথাটিই যেন প্রতিফলন হল। জমজমাট ফুটবল শৈলির সব নমুনা দেখা গেল দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে।

ঘরের দল ডিফেন্ডিং চ্যম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী তাদের শুরুটা চ্যাম্পিয়নদের মতোই শুরু করল। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তানের শাহিন আসমাঈয়ি এফসিকে।

তবে স্বাগতিকদের সহজে ছাড় দেয়নি বিদেশী দলটি। হাড্ডি হাড্ডি লড়াই করল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের দলটি।

ঘরের দলকে সমর্থন দিতে মাঠে এসেছিল তিন হাজার দর্শক। রোববার সন্ধ্যা সাতটা থেকে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে এই খেলা শুরু হয়। শুরু থেকেই দু দলই দ্রুতগতির ফুটবল খেলতে থাকে। খেলার ২ মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয় আবাহনীর সামনে। জটলার মধ্যে থেকে ওয়ালসনের নেওয়া শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে না গেলে-তখনই এগিয়ে যেতে পারতো ঘরের দল। এর দুমিনিটের মাথায় আবারও আবাহনীর আক্রমণ। এবার দলীয় অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের শট। তবে দুর্বল শটটি ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষের কিপার।

আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে বাড়তে থাকে খেলার বয়স। ৯ মিনিটে আফগানিস্তানের রেজা ঈয়ারির আবাহনীর ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। তবে গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় রক্ষা পায় আবাহনী। এরই মধ্যে ২৪ মিনিটে আবাহনী অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বল বাড়ান ওয়ালসনকে। বাম প্রান্ত ধরে ডি বক্সে ঢুকে সেই বল জালে জড়িয়ে দিতে দেরি করেননি ওয়ালসন। ১-০ গোলে এগিয়ে গেল আবাহনী। এরপর গোল পরিশোধে ক্ষিপ্তগতিতে খেলতে থাকে আফগান দলটি। ৩৮ মিনিটে সামানদারির ক্রস গোলবারের উপর দিয়ে না গেলে গোল পরিশোধের সুযোগ ছিল শাহীন আসমাঈয়ি এফসি’র সামনে। ৪০ মিনিটে পাল্টা আক্রমন থেকে বল পেয়ে মাঝ মাঠ থেকে সিগোজিককে বল বাড়ান ওয়ালসন। দুর্দান্ত ক্রসে সেই বল জালে জড়িয়ে দেন সিগোজিক। প্রথমার্ধ ২-০ গোলেই শেষ করে চট্টগ্রাম আবাহনী।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দুই দলই দ্রুতগতির ফুটবল উপহার দেন। তবে আফগানদের ফিটনেসের কাছে বারবার ধরা খাচ্ছিল আবাহনীর ফুটবলারদের ফিটনেস। এই সুযোগে ৫৮ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে দ্রুতগতিতে ডি বক্সের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া অমিড হুমায়ুনি ক্রস করেন সাঈদ নাসির হোসাইনকে। গোলরক্ষকে কাটিয়ে হালকা টোকায় সেই বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। এর মাধ্যমে এক গোল পরিশোধ করে আফগান ক্লাবটি। এর কিছুক্ষণ পর ৬৫ মিনিটে সমতায় আনার সুযোগ পায় শাহীন আসমাঈয়ি। তবে আনওয়ার আকবরির শটটি চলে যায় প্রতিপক্ষের কিপার রানার হাতে। গোল পরিশোধে মরিয়া আসমাঈয়ি ডিফেন্স ছেড়ে মাঝমাঠ চলে আসে। এর ফলাফল হাতেনাতে পায় দলটি। ৮২মিনিটে পাল্টা আক্রামণ থেকে বল পেয়ে সোহেল রানা বল বাড়ান সিগোজিকের উদ্দেশ্যে। তবে এসময় গোলকিপারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সিগোজিক পড়ে গেলে সেই সুযোগে বল চলে যায় ওয়ালসনের পায়ে। সেটি আলতো ছোয়ায় গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে তুলে দেন ওয়ালসন। এর মধ্যে দিয়ে ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করেন ওয়ালসন। ইনজুরি সময়ে আফগান ক্লাবটি গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও আর পেরে উঠেনি। এর মধ্যে দিয়ে ৩-১ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী। চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু চট্টগ্রাম আবাহনীর।  ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে শাহীন আসমাঈয়ি’র হেড কোচ বঈর ইজামবারডিয়েভ বলেন, পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও প্রতিপক্ষের তিন খেলোয়াড়ের কাছে হেরেছি আমরা। পরের ম্যাচগুলোতে আরও ভালো খেলতে চাই আমরা। ’

অন্যদিকে জিতেও হাসি নেই চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারি টিটুর মুখে। তিনি বলেন, ‘সত্যিই কঠিন ম্যাচ ছিল। আমার দলের ফুটবলারদের ফিটনেস ঘাটতি ছিল। মাঠে তারা সহজে আফগানদের সঙ্গে পেরে উঠছিল না। এর কারণ প্রস্তুতি সংকট। আমরা খুব কম সময় পেয়েছি অনুশীলন করতে। তবে দলে জাহিদ যোগ দেওয়ায় আমাদের শক্তি পরবর্তী ম্যাচ থেকে আরও বাড়বে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।