ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

গোলশূন্য ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ‘দুর্ভাগ্য’

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭
গোলশূন্য ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ ‘দুর্ভাগ্য’ গোলশূন্য ড্র চট্টগ্রাম আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এম এ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে: ‘এই ম্যাচটা মোহামেডান জিততে পারতো’-ম্যাচ শেষে চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারি টিটুর এমন কথায় বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।  প্রায় ভাঙাচোরা দল নিয়ে আব্দুল কাইয়ুম সেন্টুর দল ঠেকিয়ে দিয়েছি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীকে।  গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানার দুটি বিশ্বস্ত হাত না থাকলে হয়তো বুধবারের রাতে হেরে যেতে পারতো চট্টগ্রাম আবাহনী-যাদের চলতি টুর্নামেন্টেও চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে অনেকেই ভেবে নিয়েছে ইতিমধ্যে।

গোল শূন্য ড্র-র ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন দুই দলের গোলকিপার।  এই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত সেভ করা চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা।

  তবে এই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচের দাবিদার ছিল আরও একটা শব্দ।   ‘দুর্ভাগ্য’ তার নাম।   পুরো ম্যাচে এই দুর্ভাগ্যের কারণেই বেশ কয়েকটি গোল মিস হয়েছে দুই দলের।

বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এই ম্যাচের শুরুতেই বড় আক্রমণটা আসে মোহামেডানের ফুটবলের পা থেকে।   মাত্র তিন মিনিটেই মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের প্রায় কাছাকাছি থেকে মোহামেডানের অধিনায়ক তৌহিদুল ইসলাম সবুজের নেওয়া প্লেসিং শটটি বাক খেয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর বামবারের পাশ দিয়ে ঢুঁকে পড়ছিল-এমন সময় গোলকিপার রানা ঝাপিয়ে দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন সেই প্রতিরোধ।   প্রথম ম্যাচে হারার পর এই ম্যাচে জেতার মানসিকতা নিয়ে যে মোহামেডান মাঠে নেমেছিল তা বুঝাই যাচ্ছিল-সেই জেতার রেশ থেকেই একইভাবে ৮ মিনিটে আক্রমণে যায় মোহামেডান।  এবারও দলীয় অধিনায়ক সবুজের শট।   তবে তা প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের গায়ে লেগে ফিরে আসে।  

২৬ মিনিটের মাথায় প্রথম আক্রমণে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী।   ১০ নম্বর জার্সিধারী অগিস্টিন ওয়ালসন বল পেয়ে ঢুঁকে পড়েন ডি বক্সে। তারপর যে শটটি নেন তা দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন মোহামেডানের কিপার মামুন খান।  এর তিন মিনিটের মধ্যে আবারও আক্রমণে আবাহনী।  এবার দেশসেরা মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম।   আবাহনী ক্যাপ্টেনের ক্রস থেকে বল পেয়ে ওয়ালসনের বাম পায়ের নেওয়া শটটি ঠেকিয়ে দেন মোহামেডান গোলকিপার।   ঠিক একইভাবে ৩৬ মিনিটে সিলভার শটও প্রতিহত করেন মামুন খান। এভাবে গোলশূন্য কাটে প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই উভয় দলই গোল করতে মরিয়া হয়ে উঠে।  তবে দুর্ভাগ্যভাবে সব শটই ডি বক্সে গিয়ে প্রতিহত হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের ৬৭ মিনিটে আক্রমণে যায় চট্টগ্রাম মোহামেডান। এবার অনেকদিন পরে মাঠে নামা জাহিদ হোসাইন।   ডি বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া শটটি মোহামেডানের গোলবারে লেগে ফেরত আসে।    একইভাবে বারবার আক্রমণে গিয়েও মোহামেডানের অধিনায়ক সবুজ ডি বক্স পর্যন্ত গিয়ে আর সুবিধা করতে পারেনি।   

৮১ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পায় চট্টগ্রাম আবাহনী।   এবার অধিনায়ক মামুনুলের নেওয়া শটটি ছোট বক্সে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন মুফতা লাউয়াল।   আবাহনীর ব্যর্থতার সুযোগে উল্টো শেষ মিনিটে মোহামেডান অধিনায়ক সবুজ মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে দ্রুতগতিতে ঢুঁকে পড়েন ডি বক্সে।  কিন্তু এবারও বাধা হয়ে দাঁড়ান গোলকিপার রানা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হয়ে চট্টগ্রাম আবাহনী কোচ সাইফুল বারি টিটু প্রশংসায় ঝরালেন প্রতিপক্ষ মোহামেডানের ফুটবলারদের।   তিনি বলেন, তারা জয়ের জন্য খেলেছে-তা মাঠে দেখেই স্পষ্ট।   তাদের ফুটবলারদের মধ্যে জয়ের খিদে ছিল।   তারা এই ম্যাচটা জিততে পারতো।   ভাগ্যভালো আমরা প্রত্যাশামতো না খেলেও ড্র করতে পেরেছি। ’

অন্যদিকে মোহামেডানের কোচ আব্দুল কাইয়ুম সেন্টুর কণ্ঠে ঝরল হতাশা।  

‘আমি ফুটবলারদের দোষ দিতে পারবো না। কারণ আমি তাদের তৈরি করতে প্রত্যাশিত সময় পাইনি। তবুও তারা চেষ্টা করেছে সাধ্যমতো।   এই ম্যাচটা আমাদের জেতা দরকার ছিল। ’ বললেন সেন্টু।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।