সেমিতে যেতে হলে চট্টগ্রাম আবাহনীর ড্র করলেই হয়, অন্যদিকে নেপালের মারসিয়াংদির দরকার অবশ্যই জয়। এই সমিকরণ মাথায় রেখেই যে মাঠে নেমেছিল নেপালী দলটি তা শুরু থেকেই বুঝা যাচ্ছিল।
শুরুতেই গোল পেয়ে আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠে নেপালী ক্লাবটি। এ থেকেই ১২মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে ওলাডিপোর শট গোলবারের একটু উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়। তবে ১৮মিনিটে গোল পরিশোধের একটি সুযোগ পেয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। মিডফিল্ড থেকে দলীয় অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের বাড়ানো বল সিগোজিক মিস করলে গোলবঞ্চিত হয় আবাহনী। এর কিছুক্ষণ পর ছোট বক্সে আরও একটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস করেন আবাহনীর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় নাসির উদ্দিন। আবাহনীর একের পর এক ব্যর্থতার সুযোগে উল্টো ২১মিনিটে গোলের সংখ্যা দ্বিগুণ করে মারসিয়াংদি। এবারও ওলাডিপোর পা থেকে। বিশাল রায়ের বাড়ানো বলে বামপ্রান্ত দিয়ে দুর্দান্তভাবে নাসির উদ্দিনকে কাটিয়ে ওলাডিপো যে শটটি নেন তা গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে স্থান করে নেয় জালে। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার আক্রমণের ধার বাড়ায় প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা। এই সুযোগেই ১০ নম্বর জার্সিধারী অগাস্টিনের দুর্দান্ত শট মারসিয়াংদির গোলরক্ষক দিনেশ থাপা ঝাপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। মামুনুলের নেওয়া সেই কর্নার থেকে জামাল ভুঁইয়া বল বাড়ান নাসিরের উদ্দেশ্যে। বিশ্বমানের হেডে নাসির গোল ব্যবধান কমান। এ যেন নাসিরের ‘অতীত’ ভুলের প্রায়শ্চিত্ব। এর মিনিট সাতেক পরে আবারও সুযোগ পায় আবাহনী। কিন্তু পুরো ম্যাচে বাজে খেলা ব্রাজিলিয়ান থিয়াগোর দুর্বল শট গ্লাভসবন্দি করতে একটুও অসুবিধে হয়নি দিনেশের।
৪৫ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন মারসিয়াংদির ওলাডিপো। তার শট বামপ্রান্ত ঘেঁষে চলে যাওয়ায় হাফ ছেড়ে বাঁচে আবাহনী।
২-১ গোলে শেষ হয় প্রথামার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে চট্টগ্রাম আবাহনী। এ থেকেই ৬১মিনিটে ডিবক্সের ভেতর জটলা থেকে অগাস্টিনের বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাতে লাগে মারসিয়াংদির দেবেন্দ্র থামাংয়ের। ফলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সেই পেনাল্টি থেকে সমতায় ফেরান অগাস্টিন। মামুনুল একটু বুদ্ধি আঁটলে ৭০মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো চট্টগ্রাম আবাহনী।
আবাহনীর বিপদসীমায় দলের আক্রমণ দেখে ডি বক্সের অনেক বাইরে চলে আসেন মারসিয়াংদির কিপার। এসময় পাল্টা আক্রমণ থেকে মধ্যমাঠে বল পান দেশসেরা মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম। কিন্তু ওই সময় তিনি সরাসরি গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট না নিয়ে পাস দেন থিয়াগোকে। এই সুযোগে মারসিয়াংদির কিপার নিজের জায়গায় চলে যান।
এরপর থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবলাররা রক্ষণাত্বক খেলতে থাকে। ড্র-ধরে রাখতে তারা রক্ষণভাগ সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একেবারে খেলার শেষ সময়ে অর্থাৎ ইনজুরি টাইমে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার সুযোগ এসেছিল মারসিয়াংদির। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা মারসিয়াংদির অধিনায়ক অনিলের শট বারে লেগে ফেরত আসলে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে নেপালী ক্লাবটি।
ম্যাচ শেষে হাফ ছেড়ে বাঁচার কথা জানালেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ সাইফুল বারি টিটু। তিনি বলেন, খুব টাইট একটা ম্যাচ খেললাম। মারসিয়াংদি খুব ভালো খেলেছে। তবে পিছিয়ে থেকেও এভাবে ফিরে আসতে পারায় তৃপ্ত আমি। নাসিরের গোলটিই ম্যাচের গতিপথ নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওটাই টনিকের মতো কাজ করেছে। ’
অন্যদিকে মারসিয়াংদির কোচ চিরিং লপসাং গুরুং বলেন, রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হচ্ছে। পেনাল্টিটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
টিএইচ/টিসি