বারকোভেচের জিহ্বা ভেতরে ঢুকে তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এই সময় ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আসেন সেই প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগেরই খেলোয়াড়।
ফুটবল মাঠে গোলরক্ষকের সঙ্গে দ্বৈরথের কথা ভুলে গিয়ে মানবতাকে সর্বোর্ধ্বে রেখে বারকোভেচকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা সে স্ট্রাইকারের নাম ফ্র্যাঁসিস কনি। গত ফেব্রুয়ারিতে চেক প্রজাতন্ত্রের একটি ঘরোয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে তার ওই ‘কিংবদন্তি ঘটনা’র জন্য পুরো ফুটবলবিশ্বের কাছে ‘নায়ক’ বনে গিয়েছিলেন কনি। এবার সেই ‘নায়কোচিত’ ভূমিকার স্বীকৃতি দিল ফিফাও।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী হল লন্ডন প্যালাডিয়ামে ফিফার বর্ষসেরাদের পুরস্কৃত করতে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে এবারের ‘ফিফা ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয় আইভরিয়ান বংশোদ্ভূত টোগোলিজ তারকা কনির নাম। তার এ বিজয়ে শুভেচ্ছাও পাচ্ছেন চারদিক থেকে।
ফেব্রুয়ারির সেই ঘটনা ঘটেছিল বোহেমিয়ানস ১৯০৫ এর সঙ্গে স্লোভাকোর খেলায়। বারকোভেচ খেলছিলেন বোহেমিয়ানের হয়ে। আর কনি স্লোভাকোর হয়ে।
কনি বলছিলেন, ‘এমন ভূমিকায় সেবারই প্রথম ছিলেন না। এর আগেও তিনবার এমন ঘটেছিল তার সঙ্গে। দু’বার আফ্রিকায়, আরেকবার থাইল্যান্ডে। ’
বোহেমিয়ানের খেলার দিন মাঝামাঝি সময়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটলে মুমূর্ষু হয়ে পড়েন বারকোভেচ, গুরুতর আঘাত পান তার সতীর্থ ক্রচও। কনির ঠাণ্ডা মাথার প্রাথমিক চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা বারকোভেচ ও ক্রচকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে খেলা চলাকালেই খবর আসে দু’জনে শঙ্কামুক্ত। সেজন্য মাঠেই তুমুল করতালি পান কনি। সেই করতালির শব্দ ওঠে পুরো বিশ্বজুড়ে। এবার সেই করতালিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শামিল হলো যেন ফিফাও।
এদিন ঘোষিত হয় ফিফা বর্ষসেরা সমর্থকের পুরস্কারও। এই পুরস্কার জিতে নিয়েছে স্কটিশ ক্লাব সেল্টিকের সমর্থকেরা। ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানকে হারিয়ে নিজেদের ক্লাবের ইউরোপিয়ান কাপ জয়ের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনে গ্যালারিতে ৩৬০ ডিগ্রি ডিসপ্লে প্রদর্শন করে ভালোবাসা দেখানোয় এই পুরস্কার দেওয়া হয় তাদের।
এই ক্যাটাগরিতে মনোনীত ছিল সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে মোনাকোর সমর্থকদের সাহস যোগানো বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সমর্থকগোষ্ঠী এবং ড্যানিশ কাপের ট্রফি হুইল চেয়ারের এক প্রতিবন্ধী সমর্থকের হাতে তুলে দেওয়া এফসি কোপেনহেগেনের সমর্থক গোষ্ঠী।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
এইচএল/এইচএ/