এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলছে ময়মনসিংহ জেলা দল। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ফাইনালে এসেছে ঠাকুরগাঁও।
ফাইনালের আগে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানাতে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয় দুই দল। ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা দলের কোচ সালাহউদ্দিন আহমেদ, অধিনায়ক ইয়াসমিন আক্তার, ঠাকুরগাঁও জেলা দলের কোচ সুগা মুরমু ও সহ-অধিনায়ক বিথিকা কিসকু। উপস্থিত ছিলেন ফিফা ও এএফসির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মহিলা উইং এর চেয়ারম্যান মিস মাহফুজা আক্তার কিরণ ও পাওয়ার স্পন্সর ওয়ালটন গ্রুপের অপারেটিভ ডিরেক্টর (হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)।
সংবাদ সম্মেলন ময়মনসিংহ দলের কোচ বলেন, ‘প্রথমে ঠাকুরগাঁও দলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তারা ফাইনালে এসেছে। অবশ্যই তারা শক্তিশালী দল। আমরা এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলছি। গেল আসরের চ্যাম্পিয়ন আমরা। এবারও আমরা ভালো খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। ’
অধিনায়ক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘কে জিতবে, কে হারবে এখনই বলা যাচ্ছে না। মাঠে দেখা যাবে। মাঠের খেলায় যারা গোল করবে তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। ফাইনালে আসা দুটি দলই শক্তিশালী। জেএসসি পরীক্ষার কারণে আমাদের দলের ছয়জন মূলপর্বে খেলতে পারেনি। তাদের ছাড়া ম্যাচ খেলতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক কষ্টে ফাইনালে এসেছি। ইনশাল্লাহ ভালো খেলা উপহার দিয়ে শিরোপা জিতব। ’
ঠাকুরগাঁও জেলা দলের কোচ সুগা মুরমু বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও এর রানীশংকরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম রাঙাটুঙ্গী। সেখানকার মেয়েদের নিয়ে তিন বছর আগে এই দলটি গড়েছি। অনেক প্রতিবন্ধকতা সহ্য করে ও পেরিয়ে আমরা মেয়েদের ফুটবল দল গড়েছি। অনেক সমালোচনা সহ্য করেছি। গেল বছর সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে রংপুরের কাছে হেরেছিলাম। এবারই প্রথম ফাইনালে এসেছি। আমাদের মেয়েরা ভালো খেলা উপহার দেবে। গ্রামের মেয়েদের নিয়ে ফুটবল দল গঠন করা সহজ ছিল না। তাদের জার্সি পরানো সহজ ছিল না। অনেক বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে এসেছি আমরা। ভালো খেলে শিরোপা জিতে ফিরে যেতে চাই। ’
সহ-অধিনায়ক বিথিকা কিসকু বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে অনেক দূর থেকে এসেছি। বিজয় অর্জন করতে এসেছি। শিরোপা জিতে ফিরে যাব। আমাদের জেলার যাতে সুনাম হয় সেভাবে ভালো খেলব। জেলার সুনাম নিয়ে ফিরে যেতে চাই। আগামীকাল আমাদের ফাইনাল খেলা। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। ’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য ও মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মিস মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘বাছাইপর্ব, মূলপর্ব পেরিয়ে ফাইনালে এসেছে দুটি দল। ময়মনসিংহ জেলা দল বরাবরই ফাইনালে আসে। এবারও তারা এসেছে। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও প্রথমবারের মতো ফাইনালে এসেছে। এটা আমাদের জন্য দারুণ কিছু। এই দুই দলের অনেক খেলোয়াড় ইতোমধ্যে আমাদের নজড় কেড়েছে। তাদের বাছাই করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ’
সেমিফাইনালে ময়মনসিংহ জেলা ৪-০ গোলে রাজশাহী জেলাকে হারিয়ে ফাইনালে এসেছে। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা টাইব্রেকারে টাঙ্গাইল জেলাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে এসেছে।
২০ থেকে ২৫ আগস্ট দেশের ছয়টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় জেএফএ কাপের প্রাথমিক রাউন্ডের খেলা। ছয়টি ভেন্যুর ছয় চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে সেরা দুই রানার্স-আপ দলসহ মোট আটটি দল চূড়ান্তপর্বে উত্তীর্ণ হয়। সেখান থেকে চারটি দল সেমিফাইনালে খেলে। বিদায় নেয় চারটি দল। সেমিফাইনালে শক্তিমত্তা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে দুটি দল এসেছে ফাইনালে। বিদায় নিয়েছে আরো দুটি দল। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পালা। তবে একটি দলই শিরোপা জেতার সুযোগ পাবে।
চূড়ান্তপর্বের ‘ক’ গ্রুপে ছিল ঠাকুরগাঁও জেলা, রাজশাহী জেলা, মানিকগঞ্জ জেলা ও রাজবাড়ী জেলা। ‘খ’ গ্রুপে ছিল ময়মনসিংহ জেলা, টাঙ্গাইল জেলা, কুমিল্লা জেলা ও সাতক্ষীরা জেলা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, ৯ নভেম্বর ২০১৭
এমআরপি