বছরের শেষ এল ক্লাসিকোতে রিয়ালের মাঠ সান্থিয়াগো বার্নাব্যুতে মুখোমুখি হয় দু’দল। এ জয়ে স্প্যানিশ লা লিগায় রিয়াল থেকে ১৪ পয়েন্ট এগিয়ে শিরোপার শক্ত দাবিদার হয়ে উঠলো বার্সা।
১৭ ম্যাচে অপরাজিত বার্সা ১৪ জয় ও তিন ড্রয়ে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল নয় জয় তিন হার ও চার ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে। ১৭ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট পাওয়া অ্যাতলেটিকোর অবস্থান দ্বিতীয়। আর ১৬ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ভ্যালেন্সিয়া।
এদিন মেসি পেনাল্টির মাধ্যমে এল ক্লাসিকোর রেকর্ড ২৫তম গোল করেন। পাশাপাশি যোগ করা সময়ে ভিদালের গোলেও সহায়তা করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে দ্বিতীয়ার্ধে রিয়ালের দানি কারবাহাল লাল কার্ড দেখলে দশ জনের দলে পরিণত হয় লস ব্লাঙ্কসরা। 
ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে স্বাগতিক রিয়াল। যার বড় সুযোগটি পায় ১০ মিনিটে। কিন্তু রোনালদোর ভুলেই এগিয়ে যেতে পারেনি রিয়াল।
১৮ মিনিটে বার্সার ফুটবলার থমাস ভারমায়লেন রিয়ালের মদ্রিচকে ট্যাকেল করেন। রেফারি ভারমায়লেনকে হলুদ কার্ড দেখান। পরে ম্যাচের ২৪ ও ২৬ মিনিটে কর্ণার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি যথাক্রমে বার্সা ও রিয়াল।
৩০ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো সফরকারী বার্সা। পাওলিনহো লম্বা শট করলে তা প্রতিহত করে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। সেখান থেকে কর্ণারে গোল বঞ্চিত হয় বার্সা। 
পরের মিনিটেই সুযোগ পায় রিয়াল। এবার রোনালদোর শট বার্সার গোলরক্ষক মার্ক টার স্টেগেন কোনো রকমে হাতে লাগিয়ে বাঁচিয়ে দেন। ৩৪ মিনিটে রোনালদোর কোনাকুনি পাস থেকে গোল আদায় করতে পারেননি করিম বেনজেমা।
৪০ মিনিটে ফের সুযোগ পায় বার্সা। এবারও পাওলিনহো। তার হেড ঠেকিয়ে দেন নাভাস। আর দুই মিনিট পরে ঠিক উল্টো, বেনজেমার হেড বারে গিয়ে লাগলে গোল বঞ্চিত হয় রিয়াল। 
প্রথমার্ধটা গোলশূন্য থাকে। তবে বিরতির আগে পুরো সময়টাই সমর্থকরা আনন্দ উপভোগ করেন।
বিরতির পর নিজেদের গুছিয়ে খেলতে থাকে বার্সা। এর ফলও খুব দ্রুত পেয়ে যায় দলটি। ইভান রাকিটিচ বল সার্জিও রবার্টোর দিকে পাস দেন। আর রবার্টো সুয়ারেজের বরাবর বল দিলে গোল করতে ভুল করনেনি উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ১-০ গোলে লিড পায় কাতালানরা। 
প্রথম গোল হজম করে কিছুটা অগছালো খেলতে থাকে রিয়াল। ৬০ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন দলের অধিনায়ক সার্জিও রামোস। তবে চার মিনিট পরেই বড় ভুল করে বসেন কারবাহাল। গোল বাঁচাতে নিজের হাত দিয়েই বল ঠেকিয়ে দেন তিনি। রেফারি তাকে লাল কার্ডের সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। দশ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল। 
৬৪ মিনিটে সেই পেনাল্টির সদব্যবহার করেন বার্সার সেরা তারকা মেসি। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২৫টি গোল করলেন তিনি। রিয়ালের কিংবদন্তি আলফার্ডো ডি স্টেফানো ১৮ গোল করে দ্বিতীয়স্থানে আছেন। ১৭ গোল করে রোনালদোর অবস্থান তৃতীয়। 
দুই মিনিট পরে রিয়াল স্ট্রাইকার বেনজেমাকে উঠিয়ে নেন জিনেদিন জিদান। তার পরিবর্তে নাচোকে মাঠে নামান। এর প্রায় দশ মিনিট পরে গ্যারেথ বেলের দুর্দান্ত একটি শট ঠেকিয়ে দেন স্টেগেন। 
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের আগ পর্যন্ত দু’দলের বেশ কয়েকটি আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ হয় তবে গোল হয়নি। কিন্তু ম্যাচে রেফারির যোগ করা সময়ে মেসির সহায়তায় ভিদাল গোল করলে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় রিয়াল। 
ম্যাচের বাকি সময় আর কোনো গোল না হলে শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বার্সা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭
এমএমএস
