কিন্তু সেই অসামান্য ফাইনালে বুঝি কলঙ্ক লেগে গেলো। তাও স্বয়ং ফরাসি গ্রেট মিশেল প্লাতিনি স্বীকার করলেন, ফাইনালের আগে ব্রাজিলের মুখোমুখি যেনো না হতে হয় তাই গ্রুপিংয়ে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন চার বছরের জন্য ফুটবলে নিষিদ্ধ প্লাতিনি।
১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ জিতে আত্মবিশ্বাসে তুঙ্গে থাকা ব্রাজিল নিশ্চিতভাবেই ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের ফেভারিট ছিলো। দলে ছিলেন রোনালদো, রিভালদোদের মতো মহাতারকা। একঝাঁক তারকাখচিত ব্রাজিল দল ফ্রান্সের মাটিতেও জয়ের ধারা বজায় রেখেই এসেছিলো।
সেসময় আয়োজক কমিটির জয়েন্ট হেড ছিলেন প্লাতিনি। নিজের দেশে বিশ্বকাপ, তাতে আবার তিনি নিজে আয়োজক কমিটির অন্যতম প্রধান। লোভটা হয়তো এজন্যই সামলাতে পারেন নি। তিনি এমন কৌশলের আশ্রয় নিলেন, যেনো গ্রুপ পর্ব কেন ফাইনালের আগে ব্রাজিলের সঙ্গে সাক্ষাতই হবে না ফ্রান্সের।
উয়েফার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি এতোদিনে বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বললেন, ‘আমরা ছোট একটা কৌশলে গ্রুপিং করেছিলাম। এটা এমনভাবে করেছিলাম যে গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে ফ্রান্স আর ব্রাজিল ফাইনালের আগে মুখোমুখি হবে না’।
তিনবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী প্লাতিনি আরও দাবি করেন, ‘স্বাগতিক দল হওয়াতেই সুবিধাটা কাজে লাগিয়েছিলাম। ছয় বছর বিশ্বকাপ আয়োজনের অভিজ্ঞতা নিয়ে যদি এতোটুকু না করতে পারি তাহলে আর কি করলাম?’
তবে তিনি এটাও বললেন, এমনটা শুধু তিনি বা ফ্রান্সই করেছে তা কিন্তু নয়। বরং তার ভাষায়, ‘আপনারা কি ভেবেছেন, বিশ্বকাপের অন্য আয়োজকেরা এই সুবিধা নেয় না?’
পরিশেষে প্লাতিনি বলেন, ‘ফ্রান্স বনাম ব্রাজিল ফাইনাল, সবার স্বপ্ন ছিল এমনটাই। ‘
গ্রুপিংয়ের সুবিধা ছাড়া অবশ্য অন্য কোন সুবিধা নেয়নি ফ্রান্স। ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচ জিতেই ফাইনালে মুখোমুখি হন জিদান-রোনালদোরা। ফাইনালে জিদান জাদুতে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে লাগায় ফ্রান্স।
গ্রুপিংয়ে চাতুরীর নতুন এই তথ্য নিশ্চিতভাবেই আয়োজক দেশগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কিন্তু প্লাতিনি নিজের দেশের বিশ্বকাপকে এমন কালিমালিপ্ত করতে গেলেন (তাও এতোদিন পর) কেন সেটাও এখন প্রশ্ন বটে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এমএইচএম/জেডএস