রাশিয়া সে তো বহুদূর। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার দূরে।
এ আর নতুন কিছু নয়। যতবারই বিশ্বকাপের আসর বসেছে ততোবারই অন্য সব ফুটবল পাগল দেশের মতো বিশ্বকাপ জ্বরে কেঁপেছে ছোট এই দেশের কোটি কোটি ভক্ত। যার অন্যতম অনুষঙ্গ স্ব-স্ব পছন্দের দেশের জার্সি ও পতাকা।
হৃদয়ে প্রিয় দেশ, হাতে পতাকা, গায়ে জার্সি। ব্যাস। বিশ্বকাপ উন্মাদনার ষোলকলা পূর্ণ হয়ে গেল। ভক্তেদের বিশ্বকাপ উন্মদনার এই ষোলকলা পূর্ণতার জোগান দেন পতাকা, জার্সি বিক্রেতা ও দর্জিরা।
বিশ্বকাপ আসন্ন, তাই এই দুই শ্রেণীর মানুষের ব্যস্ততা এখন চরমে। ভক্তদের হাতে প্রিয় দেশের জার্সি ও পতাকা পৌঁছে দিতে এরই মধ্যে তারা রাজধানীর রাস্তায় নেমে পড়েছেন। কাঁধে বয়ে বেড়াচ্ছেন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি ও ফ্র্যান্সসহ অন্যান্য দেশের পতাকা।
ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জিরাও। রাজধানীতো বটেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জার্সি পৌঁছে দিতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রোববার (২০ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গিয়ে সেই দৃশ্যই চোখে পড়লো।
অ্যাভিনিউ’র দুপাশের ফুটপাতে দোকানিরা পতাকার পসরা সাজিয়ে বসেছেন। যেখানে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও জার্মানির পতাকার আধিক্যই চোখে পড়লো। চোখ এড়িয়ে যায়নি তিন দেশের জার্সিও।
আর অ্যাভিনিউর সমবায় টুইন টাওয়ারের পতাকা তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা গেল পতাকা সেলাই, প্রিন্ট, কাটা ও জার্সি তৈরির ধুম লেগে গেছে। নিপুণ হাতে দর্জি জার্সিতে রং ও নম্বর বসাচ্ছেন দর্জি।
হৃদয় নামক এক দর্জির সঙ্গে কথাও হলো। বিশ্বকাপ ব্যস্ততার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, ‘অন্যন্য সময়ে সাধারণত রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করি। সামনে বিশ্বকাপ তাই এখন সারারাতই কাজ করতে হয়। সকালেই ঢাকা বাইরে মাল ডেলিভারি দিতে হবে। তাই রাত জেগে প্রিন্ট ও সেলাইয়ের কাজে কারিগরদের ব্যস্ত থাকতে হয়। ’
কোন জার্সির এবং পতাকার চাহিদা বেশি? এমন প্রশ্নের জবাব পেতে আর তার কাছে যেতে হলো না। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেল আর্জেন্টিনার জার্সি তৈরিতেই তারা বেশি ব্যস্ত। মেসির নাম ও জার্সি নম্বর বসাতে বসাতে তাদের ক্লান্ত প্রায় অবস্থা।
তাদের কথা ভেবেই দর্জি ও বিক্রেতাদের এমন নিরলস পরিশ্রম। সেটা নিছক এমনি এমনি নয়। বিশ্বকাপ সামনে রেখে আয়ের দারুণ একটা সুযোগও তারা পাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
এইচএল/এসএইচ