ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩১, ৩০ জুলাই ২০২৪, ২৩ মহররম ১৪৪৬

ফুটবল

মেসিকে চান নেইমার, পিএসজিও তৎপর

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
মেসিকে চান নেইমার, পিএসজিও তৎপর বার্সার জার্সি গায়ে নেইমার ও মেসি/ছবি: সংগৃহীত

লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার সম্ভাবনা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। এরইমধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি, ইন্টার মিলান, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও পিএসজির মতো জায়ান্ট ক্লাবগুলো সুযোগের অপেক্ষায় আছে বিশ্বসেরা ফুটবলারকে নিজেদের ঘরে আনার।

তবে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের সাবেক সতীর্থ নেইমার জুনিয়র চান প্রিয় বন্ধু প্যারিসে তার সঙ্গেই যোগ দিন।

ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ইএসপিএন’র এক রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, মেসি-বার্সা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে পিএসজি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম 'এএস স্পোর্টস' দাবি করেছে, মেসির এজেন্ট ও বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসির সঙ্গে দুই দফা ফোনালাপ সেরে নিয়েছেন পিএসজি ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো। অন্যদিকে নেইমার নিজে মেসিকে পিএসজিতে আনার ব্যাপারে তৎপর হতে শুরু করছেন। এরইমধ্যে কয়েক দফা কথাও বলেছেন তারা।

২০১৭ সালে মেসির ছায়া থেকে বের হতেই ২২২ মিলিয়ন ইউরোর ট্রান্সফার ফি’র রেকর্ড গড়ে ফ্রান্সের রাজধানীতে পাড়ি জমান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। তবে মেসির সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি হয়নি। দুজনের চমৎকার রসায়ন মাঠের বাইরে এখনও আগের মতোই সতেজ। গত মৌসুমে পিএসজিতে ‘অখুশি’ নেইমারকে ক্যাম্প ন্যুয়ের ফেরানোর চেষ্টা মেসিও করেছিলেন। তবে দুই ক্লাবের দূরত্ব তাদের আবারও একসঙ্গে খেলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

নেইমার ছাড়াও পিএসজি মিডফিল্ডার ও মেসির জাতীয় দলের সতীর্থ আনহেল দি মারিয়াও প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দাবি করেছে ‘ইএসপিএন’। কিন্তু আর্থিক নীতিমালার কারণে মেসিকে কেনা পিএসজির পক্ষে বেশ কঠিন কাজ, তবে অসম্ভব নয়। কারণ, এরইমধ্যে দলের বিশাল খরচের ভার কমাতে এদিনসন কাভানি, থিয়াগো সিলভা, এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোতিং এবং টমাস ম্যুনিয়েরকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসজি। এর মধ্যে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো চেলসিতে পাড়িও জমিয়েছেন।  

গত মঙ্গলবার এক ব্যুরোফ্যাক্সের (প্রত্যায়িত পত্র) মাধ্যমে বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন মেসি। কোনো ঝামেলায় না জড়িয়ে বিনা ট্রান্সফার ফি’তেই ক্লাব ছাড়ার অনুমতি চেয়েছেন মেসি। বর্তমান চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতি মৌসুম শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ক্লাব ছাড়ার সুযোগ আছে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের সামনে। তবে নিয়ম অনুযায়ী, এই ক্লজ কেবলমাত্র মৌসুম শেষের ২০ দিন আগে প্রযোজ্য হওয়ার কথা। অর্থাৎ গত ১০ জুন শেষ হয়ে গেছে এই সুযোগ।

কিন্তু করোনা মহামারির কারণে মৌসুম শেষ হতে আগস্ট মাসের প্রায় শেষ পর্যন্ত লেগে যায়। নতুন মৌসুমও শুরু হয়নি। ফলে মেসি এই যুক্তি দেখিয়েই ফ্রি এজেন্ট হিসেবে যেতে চাইছেন। এজন্য সময়মতো বুরোফ্যাক্স পাঠিয়েছেন যেন প্রমাণ হিসেবে দেখানো যায়। কিন্তু বার্সা চাইছে আগের ক্লজ অনুসরণ করতে। অর্থাৎ মেসিকে যেতে হলে রিলিজ ক্লজের ৭০০ মিলিয়ন পরিশোধ করতে হবে। তাদের যুক্তি, ২০২১ সাল পর্যন্ত মেয়াদ থাকা চুক্তি এরইমধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে। এই নিয়েই এখন আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তবে মেসি যদি আইনি লড়াইয়ে জয়ী হন এবং ফ্রি ট্রান্সফারে বার্সা ছাড়তে পারেন, তাহলে পিএসজি সহজেই তাকে কিনতে পারবে। কিন্তু দলে ভেড়ালেও ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডকে মোটা অঙ্কের বেতন-বোনাস দিতে হবে। এদিকে মেসিকে কেনার ক্ষেত্রে ম্যানচেস্টার সিটি বরং অনেকটা এগিয়ে আছে। ‘ইএসপিএন’র রিপোর্ট বলছে, বার্সা অধিনায়ককে এরইমধ্যে ৫ বছরের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে সিটিজেনরা। এর মধ্যে ৩ বছর ইতিহাদে এবং বাকি ২ বছর যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে ম্যানসিটির মালিকানাধীন ক্লাব নিউইয়র্ক সিটি এফসিতে খেলার প্রস্তাব।

বর্তমানে ইবিজা সমুদ্র সৈকতে সপরিবারে ছুটি কাটাচ্ছেন নেইমার। লিগ ওয়ানের পরের মৌসুম শুরুর আগে তার সঙ্গে ছুটি কাটাতে গেছেন দি মারিয়া, কেইলর নাভাস এবং মাউরো ইকার্দি ও তাদের পরিবার। একটা প্রশ্ন অবশ্য থেকেই যাচ্ছে, ইকার্দি থাকলে মেসি পিএসজিতে যাবেন কিনা। কারণ আর্জেন্টাইন সতীর্থের সঙ্গে মেসির সম্পর্ক একপ্রকার সাপে-নেউলে। এটা অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গ। আপাতত মেসি-বার্সা বিচ্ছেদের দিকেই নজর সবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।