সাধারণত জুন-জুলাইয়ে বিশ্বকাপের আসর বসলেও ব্যতিক্রম হচ্ছে এবার। কারণ আয়োজক দেশ কাতারে জুন-জুলাইয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ থাকায় তখন বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ নেই।
তবে বর্তমানে কাতারের তাপপ্রবাহ যে খুব একটা নিম্নমুখী তা বলা যাচ্ছে না। বছরের এই সময়ে অস্বাভাবিক গরম ও আর্দ্রতা থাকে দেশটিতে। এই গরমে অনুশীলন বা ম্যাচের সময় ‘হিট স্ট্রোকে’ ভোগার ঝুঁকিতে রয়েছেন ফুটবলাররা। রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব ও ফলিত শরীরবিদ্যার অধ্যাপক মাইক টিপটন।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কাতারে পা রাখছে দলগুলো। অনেকে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে। তবে গতকাল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকায় অনুশীলন সূচিতে বদল আনে ওয়েলস। বিকেলের পরিবর্তে সন্ধ্যায় অনুশীলন করে তারা, যখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে। ওয়েলস ফরোয়ার্ড মার্ক হ্যারিস বলেন, ‘হোটেলে চারপাশে কেবল হাঁটাহাঁটি করতেই ঘামাচ্ছিলাম আমরা। সকালে ১১টার দিকে একটু হাঁটতে বেরিয়েছিলাম এবং খুবই গরম ছিল তখন। ’
টিপটনের মতে, অতিরিক্ত গরম শুধু শারীরিক নয় মানসিকভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে ফুটবলারদের ওপর। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে হিট স্ট্রোকও হতে পারে, যা কিনা খুবই গুরুতর মেডিক্যাল কন্ডিশন। আরেকটা ব্যাপার হলো যখন শরীরের তাপমাত্রা গরম হয়ে যায়, তখন মানুষ বাজে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে। সেই অবস্থায় কঠোর অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তারা, কিন্তু এতে করে বরং গরমের সমস্যাটাই আরও প্রকট হবে। ’
বিশ্বকাপে গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কোচরা তাদের খেলার ধরণে পরিবর্তন আনবেন বলে মনে করেন টিপটন।
তিনি বলেন, ‘ম্যানচেস্টার বা লিভারপুলে খেলার অভ্যাস থাকলে গরম নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তবে সমস্যাটা হবে দক্ষিণ ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর। তাদের খেলার ধরণে বদল আনতে হবে। কারণ এই সত্যটা মানতেই হবে, আপনি একই লেভেলে ৯০ মিনিট পর্যন্ত দৌড়াতে পারবেন না। এর ফলে শরীরের তাপমাত্রার প্রতি আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণই থাকবে না । তাই ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থেকে ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় খেলাটাই উত্তম। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ’
বিশ্বকাপ শুরুর সময় অবশ্য তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। তাছাড়া ম্যাচের সময় কাতারের প্রতিটি স্টেডিয়ামই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২২
এএইচএস