জর্জ উইয়াহর আক্ষেপটা চিরজীবনের। ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হয়েও কখনো বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি।
তাই তো গতকাল আহমেত বিন আলি স্টেডিয়ামের গ্যালারী বসেই বিশ্বমঞ্চে ছেলের খেলা দেখেন উইয়াহ। ছেলেও তাকে হতাশ করেনি। টিমোথির গোলেই গতকাল ওয়েলসের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের কয়েকদিন আগে টিমোথি বলেছিলেন, ‘আমার বাবা তার দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সেই সুযোগ হয়ে উঠেনি। এখন আমার মধ্যে তার কিছুটা ছাপ আছে। আমি মনে করি, এটা আশীর্বাদ। এই মঞ্চে নিজের পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা চমৎকার। ’
উইয়াহ লাইবেরিয়ার নাগরিক হলেও টিমোথি জন্ম নেন নিউইয়র্কে। তবে লাইবেরিয়া, জ্যামাইকা অথবা ফ্রান্সের হয়েও খেলার সুযোগ ছিল তার। কিন্তু নিউইয়র্কে যেহেতু বেড়ে উঠেছেন, তাই অন্য দেশের হয়ে খেলার ভাবনাটা মাথাতেই আনেননি। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জার্সিতে অভিষেক হয় ২০ বছর বয়সি ফুটবলারের। চার বছরের মাথায় বিশ্বমঞ্চে নিজের জায়গা করে নেন তিনি।
অথচ সেই স্বাদ কখনোই পাননি জর্জ উইয়াহ। লাইবেরিয়ার মতো ছোট দেশ থেকে কেউ ব্যালন ডি’অর জিতবেন, এমনটা হয়তো আগে কেউ ভাবেননি। কিন্তু ১৯৯৫ সালে উইয়াহ সেই ভুল ভাঙিয়েছেন। শুধু লাইবেরিয়া কেন এখন পর্যন্ত আফ্রিকার ইতিহাসে ব্যালন ডি’অর জেতা একমাত্র ফুটবলার তিনি।
১৮ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে পিএসজি, এসি মিলান, চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটির মতো বড় বড় ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন উইয়াহ। ৪৭৮ ম্যাচে গোল করেছেন ১৯৩টি। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সফল হতে পারেননি। যদিও ২০০২ বিশ্বকাপ খেলার অনেকটা কাছেই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাছাইপর্বের এক পয়েন্ট কম থাকার কারণে স্বপ্নটা আর পূরণ হয়নি তার।
২০০৫ সালে লাইবেরিয়ায় দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেন উইয়াহ। অবশেষে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবেক এই ফুটবলার। কিন্তু গতকাল কেবলই একজন বাবা হিসেবে ধরা দিয়েছিলেন নিজেকে!
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এএইচএস