ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফ্রান্স

ব্রাসেলসে প্যারিস হামলার প্রভাব

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
ব্রাসেলসে প্যারিস হামলার প্রভাব ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ব্রাসেলস (বেলজিয়াম): গত ১৩ নভেম্বর প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর থমকে গেছে বেলজিয়ামে বসবাসরত ৩ হাজারের বেশি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর ব্যবসা-বাণিজ্য। প্রায় ২ মাস হলো পর্যটক শূন্য বেলজিয়াম।


 
এছাড়া পথে পথে তল্লাশী, সেনা টহল, রেড এলার্ট ও সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেক দেশের নাগরিকই হয়রানির ভয়ে এড়িয়ে চলছেন বিখ্যাত ডায়মন্ড সিটি খ্যাত এনটারপেন, ঐতিহাসিক নামুর সিটাডেল বা ন্যাটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদরদপ্তর খ্যাত ব্রাসেলস শহরকে।
 
সদ্য বিদায়ী বছরের ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বাতাক্লুতে যে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়, তার উৎপত্তি স্থল ছিল বেলজিয়াম। ব্রাসেলসের একটি বাড়ি থেকেই হামলার পরিকল্পনা করে আরব বংশদ্ভুত বেলজিক তরুণরা।
 
প্রায় ৩০ বছর বেলজিয়ামে আছেন বিক্রমপুরের সৈয়দ মাহমুদ আক্কাছ। বেলজিয়ামের পাসপোর্টধারী আক্কাছ ব্রাসেলসে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একজন। শহরের কেন্দ্রস্থলেই নিজবাড়ির নীচতলায় তার নাইট শপ। বেলা ১২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত খোলা থাকে এ দোকান। এতোদিন কাস্টমার সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল তার এবং তার ভাতিজার। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নাই। কাস্টমারের দেখা মেলাই ভার।
 
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বেলজিয়ামে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রায় সাড়ে তিন হাজার দোকান আছে। যার মধ্যে শ’পাঁচেক বড় আকারের গ্রোসারি শপ এবং তিন হাজারের মতো নাইট শপ আছে। গ্রোসারিগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সব ধরনের মাছ-মাংস, সবজি  ও অন্যান্য পণ্য মেলে। আর নাইট শপগুলো মুলত ফাস্ট ফুড, বেভারেজ, অ্যালকোহল, বিয়ার, সিগারেট, বেকারি আইটেম বিক্রি হয়।
 
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আহমেদ শাজাহান জানান, বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা এখানে ৫ হাজারের মতো। অন্যান্য দেশের মতো এখানকার প্রবাসীরা চাকরির পেছনে ছোটেন না। সবারই ছোট খাটো কোন না কোন ব্যবসা আছে। তাই বর্তমান ব্যবসায়িক মন্দা ও পর্যটক ঘাটতিতে ভালো নেই তারা।
 
তিনি বলেন, এমনিতে বাংলাদেশিরা এখানে ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কাউকেই কেউ হয়রানি করেনি। তবে সব নজর আরবদের দিকে। আরব পাড়াগুলোতে সেনা টহল অব্যাহত আছে। অন্যদিকে যেসব মানুষের বেলজিয়ামে বসবাসের অনুমতি নাই, তারা ভয়ে বাইরে বের হচ্ছে না। রাস্তায় রাস্তায় টহল চলায় পর্যটকরা অসস্তিতে আছে।
 
তিনি বলেন, আগে যেখানে ৪ থেকে ৫ হাজার ইউরো বেচাকেনা হতো প্রতিদিন, সেখানে এখন হাজার ইউরো পুরোতেই সকাল হয়ে যায়।
 
বেলজিক তরুণ রাফায়েলের ভাষায়, প্যারিসের ক্ষত সেরে উঠতে সময় লাগবে। এ এক এমন ক্ষত যা আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না। আবার তড়িঘড়ি করে কেটে ফেলতে পারবেন না।

তিনি বলেন, আরো কয়েক বছর লাগবে প্যারিস হামলায় নষ্ট হওয়া পারসন টু পারসন পারস্পারিক বিশ্বাসের জায়গা ফিরে পেতে। এর ভোগান্তি কেবল বেলজিয়াম বা প্যারিস নয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং পুরো বিশ্বকেই এর খেসারত দিতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬‍
আরএম/জেডএম

** বাংলাদেশি সব পণ্যই মে‌লে বেলজিয়ামে
** প্যারিসে বাংলাদেশ
** আমাদের কথা কেউ বলে না!
** ট্যাক্সি চালক থেকে মেয়র প্রার্থী
** হাঁটা পথে ইউরোপে
** প্যালেস ডি সালভাদর দালি
** প্যা‌রিসে ম‌লিন আবহে বড়‌দিন
** গির্জাভিত্তিক পর্যটন
** এনভার্সে জাকিরের দেখা
** বাস্তিল ঘিরে পর্যটন
** প্যারিসের গণতন্ত্র ময়দান
** বাতাক্লঁয়ে প্রতিদিনই আসছে মানুষ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।