ফ্রাঙ্কফুট, জার্মানি: আতঙ্ককে দিন কাটছে জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসী বাংলাদেশিদের। আটক ও দেশে ফেরত পাঠানোর ভয়ে এরইমধ্যে অনেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন।
গত এক সপ্তাহে আখেন, বন, ক্লোন, বার্লিন, ফ্রাঙ্কফুট থেকে ১২ জনের মতো বাংলাদেশিকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানোয় এখানে বসবাসরত হাজার পাঁচেক অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে এ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জার্মানির বন শহরের প্রবাসী বাংলাদেশি মাহাবুব হাসান খান বাংলানিউজকে বলেন, ক্লোনে নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে নারীদের ওপর হামলা চালায় তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া ও মরোক্কান নাগরিকরা। এদের সঙ্গে কিছু পাকিস্তানি ও তুরস্কের নাগরিক ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু এ ঘটনায় প্রথমেই অভিযোগ করা হয় সিরিয়ান শরনার্থীদের।
তিনি বলেন, ঘটনার পর আউসল্যান্ডার বা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়, সেই থেকে সব অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কেল সরকার। তবে এক্ষেত্রে আফগান, ইরাক ও সিরিয়ান শরনার্থীরা ছাড় পেলেও বাকিদের দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ত্রিশ বছর যাবত জার্মানিতে শরনার্থীদের নিয়ে কাজ করেন অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম। বাংলা, হিন্দী, উর্দু, পারসি, টার্কিস, আরবি ও ইংরেজি ভাষার এই বাংলাদেশি জার্মান সরকারের শরনার্থী বিভাগের অনুবাদক।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জার্মান সরকার এখন অভিবাসীদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে আছে। এমনিতে বাংলাদেশিদের সম্পর্কে জার্মানদের ভালো ধারণা থাকলেও যাদের অভিবাসন আবেদন গ্রহণ হয়নি ও যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তাদের পক্ষে এখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
শরীফুল ইসলাম জানান, এরইমধ্যে দেশটির সরকার সকল অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ত্যাগ করার নোটিশ দিয়েছে। যারা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছেন না তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে খুঁজে বের করে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে কাউকেই কিছু বলা হচ্ছেনা। নির্দিষ্ট ব্যক্তির অবস্থান নিশ্চিতের পর বিমানে টিকিট কনফার্ম করেই তাকে ঘর থেকে তুলে এনে সরাসরি বিমানে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এরইমধ্যে আখেন, বন, ডুসেলড্রফ, ক্লোন, ফ্রাঙ্কফুট, বার্লিন ও মিউনিখ থেকে এমন ১২ জন বাংলাদেশিকে গত এ সপ্তাহে দেশে পাঠানো হয়েছে বলে বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে দাবি করা হয়েছে।
কেবল বাংলাদেশিই নয়, উত্তর আফ্রিকার ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকেও একই কায়দায় ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই এসব দেশের তিন থেকে ৫ হাজার অভিবাসীকে দেশে পাঠানো হচ্ছে।
জার্মান সরকার তার দেশের নাগরিকদের কাছে অঙ্গিকার করেছে অচিরেই ডয়েচল্যান্ডকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০১৪ পূর্ববর্তী সময়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে ইরাক, আফগান ও সিরিয়ান নাগরিকরা জার্মানিতে থাকার অনুমতি পাবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে মার্কেল সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮,২০১৬
আরএম/আরএইচএস