ঢাকা, শনিবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

নিখরচায় বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে ৪৬ জনের ছানি অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
নিখরচায় বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে ৪৬ জনের ছানি অপারেশন রোগীর চোখে অপারেশন করা হচ্ছে। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গরিব ও দুস্থ ৪৬ জন রোগীর বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে।  

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ও বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন এবং নবজাগরণ প্রতিবন্ধী অধিকার সংস্থার উদ্যোগে দিনব্যাপী ফ্রি অপারেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাঙ্গচোর হাট থেকে রুহুল আমিন নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বিনামূল্যে বসুন্ধরা আই হাসপাতালে চোখের ছানির চিকিৎসা করতে এসেছেন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের ওইখানে মাইকিং হয়েছিল। মাইকিং ফ্রি চোখের ছানি অপারেশনের কথা শোনার পর আমরা ক্যাম্পে যাই। ক্যাম্প থেকে আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়। খুবই ভালো লাগছে। বিনামূল্যে চোখের অপারেশন করতে পারবো কখনোই ভাবিনি। বিনামূল্যে হলেও এ হাসপাতালের সবার ব্যবহার ভালো লেগেছে। ’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণপুর থেকে চোখের অপারেশন করাতে এসেছেন মোনাজের আলী নামের এক ব্যক্তি। নিখরচায় চিকিৎসা করাতে পেয়ে তিনি খুবই আনন্দিত।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার আমার অপারেশন হয়েছে। এখন ভালো উপভোগ করছি। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এটা একটি মহৎ কাজ। এতে আমি বেশ উপকৃত হয়েছি।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্যাম্পে আমরা সাড়ে আটশ’ জন রোগীর বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করেছি। এর মধ্যে আমরা ২শ ৩০ জন রোগীর অস্ত্রোপচারের জন্য সিলেক্ট করি। এর মধ্যে দুই দফায় ১০৪ জন রোগীর চোখের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। আজকে আমরা ৪৬ জন রোগীর চোখে অপারেশন করছি। এর মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ৪৬ রোগীর চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেবো। বিনামূল্যে এ ধরনের সেবা শুধুমাত্র বসুন্ধরা আই হাসপাতালই দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের আরেকটি প্রতিষ্ঠানও নেই যারা বিনামূল্যে চক্ষুসেবা দেয়।

তিনি বলেন, অপারেশনের জন্য এসব রোগীকে আমরা নিখরচায় বসুন্ধরা আই হাসপাতালে নিয়ে আসি। অপারেশনের আগের দিন বিনামূল্যে রোগীর ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসারসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। পাশাপাশি কি ধরনের লেন্স লাগবে তাও দেখা হয়। যাতে অপারেশনে কোনো জটিলতা না থাকে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রচারণা কিছুটা কম। তবে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে কেউ যদি আমাদের রিকোয়েস্ট করে তারা তাদের নিজ এলাকায় ক্যাম্প করবে। আমরা তাদের ডাকে সাড়া দেই।  

চক্ষু অপারেশনের ফান্ডের বিষয়ে প্রফেসর ডা. সালেহ আহমদ বলেন, এ ক্যাম্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে দরিদ্রদের বিনামূল্যে চক্ষুসেবা দেওয়া। এ সেবার যত খরচ আছে, তা আমরা বিভিন্ন ফান্ড থেকে বহন করি। মুসলিম রোগীদের জন্য যাকাত ফান্ড এবং হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য দরিদ্র ফান্ড (পোর ফান্ড) থেকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। আবারও মাঝেমধ্যে হাসপাতালের নিজস্ব ফান্ড থেকেও এ খরচ বহন করা হয়। মোট কথা যাকাত ফান্ড এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ডোনেশন ও সার্বিক সহযোগিতায় আমরা এ ক্যাম্পগুলো পরিচালনা করছি। সারা দেশের মানুষের অন্ধত্ব নিবারণই হচ্ছে বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতাল এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পাবলিক রিলেশনস অফিসার ফাইজা রহমান বলেন, গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগে থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৯শ বেশি রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।

এ ক্যাম্পটি গত ২২ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাব জায়গীর রহমানিয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার ও বৃহস্পতিবার সেখানকার ৩য় ব্যাচের ৪৬ জন রোগীর এ অপারেশন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
ইএসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।