ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

পটুয়াখালীতেও শিশুর দেহে মিলছে মাত্রাতিরিক্ত সিসা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
পটুয়াখালীতেও শিশুর দেহে মিলছে মাত্রাতিরিক্ত সিসা 

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতেও শিশুর দেহে মিলছে মাত্রাতিরিক্ত সিসা।  এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফের উদ্যোগে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) গবেষণায়।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে সিসা দূষণ প্রতিরোধে স্থানীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে অবহিতকরণ ও জনসম্পৃক্ততা বিষয়ক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।  

সভায় ইউনিসেফ প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় ব্যাটারি পুনরায় ব্যবহার করা হয় এমন দোকানে কর্মরত ও এর আশপাশের শিশুদের রক্তের নমুনা এবং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পচা কোরালিয়া এলাকার মোট ২৪৮ জন শিশুর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করা হয়।  

বরিশাল ইউনিসেফ অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আহসানুল ইসলাম জানান, পটুয়াখালীর ৪৬ শতাংশ শিশুর শরীরে মাত্রাতিরিক্ত সিসার উপস্থিত পাওয়া গেছে। দেশের চার জেলায় শিশুদের রক্তে সিসার সক্রিয় উপস্থিতি মিলেছে। রক্তে সিসার উপস্থিতি থাকা শিশুদের মধ্যে ৬৫ শতাংশের রক্তে এর পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত, যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। পটুয়াখালী, টাঙ্গাইল, খুলনা ও সিলেট এ চার জেলার শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে। পরীক্ষার আওতায় আসা ৯৮০ শিশুর সবার রক্তে সিসা মিলেছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রা ৩ দশমিক ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি। এর মধ্যে ২৪ মাস থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।  

‘শিশুদের জন্য সুস্থ জীবন বিনির্মাণে সিসা দূষণমুক্ত পরিবেশ আমাদের অঙ্গীকার’ স্লোগানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় কর্মশালার আয়োজন করে সিভিল সার্জন অফিস।  

সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শিশু বিশেষজ্ঞ ও আফ্রিকার নাগরিক প্রিসিলা, ইউনিসেফ বরিশালের প্রধান আনোয়ার হোসেন, পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার, পটুয়াখালী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন।  

এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে মানবদেহে সিসা দূষণ দিন দিন বাড়ছে। সিসা দূষণের উৎস যেমন হলুদ, রং, পেট্রোল, সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে সিসা দূষণ কমাতে হবে। পৃথক গবেষণার মাধ্যমে সিসা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।  

কর্মশালায় সিসা দূষণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ও তরুণ সংগঠনের প্রতিনিধিরা নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। পরে সিসা দূষণ প্রতিরোধে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করে গণস্বাক্ষর করেন অংশগ্রহণকারী ও অতিথিরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩ 
এসআই 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।