ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

কমিউনিটি ক্লিনিকে দেওয়া হবে উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিসের ওষুধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
কমিউনিটি ক্লিনিকে দেওয়া হবে উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিসের ওষুধ

ঢাকা: কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকা হালনাগাদকরণ কমিটির এক সভায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের জন্য এমলোডিপিন ৫ মিলি গ্রাম ও ডায়াবেটিসের জন্য মেটফরমিন ৫০০ মিলি গ্রাম সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ দেওয়ার বিষয়ে কমিউনিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, হ্যাঁ এটা দেওয়া হচ্ছে, কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর ফর ডায়াবেটিস'। চিকিৎসক ডায়াবেটিসের ওষুধ প্রেসক্রিপশন করে দিলে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে আমরা সাপ্লাই দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে ডায়াবেটিসের একটি এবং উচ্চ রক্তচাপের একটি ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে, মন্ত্রণালয়ে এটা অনুমোদন হলে, উপজেলা পর্যায়ের এনসিডি (নন কমিউনিকেবল ডিজিজ) কর্নার থেকে প্রেসক্রিপশন করা হবে, সেই প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ নেওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলার ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এ রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বে ১২৮ কোটি মানুষ (৩০-৭৯ বছর) উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে, যার দুই-তৃতীয়াংশ বাস করে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য দুই থেকে তিন মাসের ওষুধ এক সঙ্গে দেওয়ার পরিষেবা চালু করা এবং এজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা প্রভৃতি বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) ও এর সহযোগী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের হিসাব মতে, ২০১৯ সালে প্রতি ১১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, যার মোট পরিমাণ ৪২৫ মিলিয়ন। ২০৪৫ সালে ৪৮ শতাংশ বেড়ে তা ৬২৯ মিলিয়ন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিস রোগীর ৮৭ শতাংশই উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে বসবাস করছেন।

বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিস বাড়ার হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্থান শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম। ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে। পৃথিবীতে বর্তমানে উচ্চ হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।