ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বাংলাদেশে বিক্রি দেদারসে

অ্যাজিথ্রোমাইসিনে বাড়ছে ‘মৃত্যু-ঝুঁকি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১২
অ্যাজিথ্রোমাইসিনে বাড়ছে ‘মৃত্যু-ঝুঁকি’

ঢাকা : বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়। এটি ব্যবহারের প্রথম পাঁচ দিনেই হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক গবেষণা সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন। সম্প্রতি এই নিবন্ধটি উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।

মার্কিন অঙ্গরাজ্য টেনেসিতে ১৯৯২ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে অ্যাজিথ্রোমাইসিনজনিত মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণায় কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেননি বা অ্যামোক্সিসিলিন নামের অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেছেন এমন রোগীদের সাথে তুলনায় দেখা যায়, অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রহণকারীদের হৃগরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। প্রতি ১০লাখ রোগীর মধ্যে এ ধরনের ওষুধ সেবনকারীদের মৃত্যুহার প্রায় ২৪৫।

ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক ওয়েন রে জানান, যেহেতু অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝুঁকির তথ্য পাওয়া গেছে সেহেতু হৃদরোগীদের চিকিৎসার সময় এখন চিকিৎসকদের অবশ্যই বিকল্প কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের চিন্তা করা উচিত।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী ঝড় উঠলেও বাংলাদেশে এই অ্যান্টিবায়োটিক মুড়ি-মুড়কির মত ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চিকিৎসকদের দ্বিধাহীন ব্যবস্থাপত্র ছাড়াও সাধারণ মানুষ জ্বর-সর্দির ছোটোখাট‍ সমস্যাতেও দেদারসে গ্রহণ করছে অ্যাজিথ্রোমাইসিন। আর এই সুযোগে দেশের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক কোম্পানি থেকে শুরু করে মধ্যম সারির প্রায় প্রতিটি কোম্পানিরই নিজস্ব ব্রান্ডের অ্যাজিথ্রোমাইসিনে বাজার এখন সয়লাব। যেমন চাহিদা, তেমন সরবরাহ।

বাংলাদেশে বেক্সিমকো ফার্মার তৈরি এ ওষুধটির নাম অ্যাজিথ্রোসিন (Azithrocin), স্কয়ারের জিম্যাক্স (Zimax), নোভার্টিসের অ্যাজিথ (Azyth), এসিআই’র ওডাজিথ (Odazyth), এসকেএফ’র জিথ্রিক্স (Zithrix), অপসোনিন’র অ্যাজিটিন (Azitin), অ্যারিস্টোফার্মা’র এজেড (AZ), জেনারেল ফার্মার অ্যাজোম্যাক (Azomac)। এছাড়া অন্যসব প্রতিষ্ঠানেরও নিজ নিজ নামের অ্যজিথ্রোমাইসিন বাজারে রয়েছে।  

তবে ক্ষতিকারক আর মুত্যুঝুঁকি বৃদ্ধিকারক এই ওষুধটি নিয়ন্ত্রিত বা প্রেসক্রিপশনে ব্যবহারের ব্যবস্থা নেই! স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ওষুধ প্রশাসনের এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

প্রসঙ্গত, অ্যাজিথ্রোমাইসিন সিরিজের অ্যান্টিবায়োটিক সর্বপ্রথম ১৯৮১ সালে বাজারে আনে ক্রোয়েশিয়ার ওষুধ কোম্পানি পিলভা। পরে বহুজাতিক ওষুধ নির্মাতা ফাইজার কোম্পানি এটিকে সারাবিশ্বে জিথ্রোম্যাক্স বা জিম্যাক্স নামে বাজারজাত করে।

এই অ্যান্টিবায়োটিক মানবদেহে রোগসৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি প্রতিহত করে। তাই এটি বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ব্যাপকহারে ব্যবহৃত একটি ওষুধ। তবে এর ব্যবহারে চামড়ায় র‌্যাশ, চুলকানি, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দনজনিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আমেরিকান হসপিটাল ফরমুলারি সার্ভিস।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১২
সম্পাদনা: শামসুন নাহার ও আরিফুল ইসলাম আরমান, নিউজরুম এডিটর; আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর;

জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর 
Jewel_mazhar@yahoo.com
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।