ঢাকা: বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের আস্থার প্রতীক হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ হাসপাতালে এবার নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন অনলাইনে টিকেট, গর্ভবতী মায়েদের জন্য আইসিইউ, পেডিয়াট্রিক আইসিইউসহ আরও কিছু ওয়ার্ড।
উদ্বোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এখন সর্বমোট ১৩৬ বেডের আইসিইউ। সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে হাসপাতালে আইসিইউসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকা মেডিকেলে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু নতুন কিছু হয়। শুধু ঢাকা মেডিকেলে নয়। সারা দেশের হাসপাতালে নতুন নতুন কিছু সংযোজন হচ্ছে। মা ও শিশুর মৃত্যুর হার কমাতে হবে। এজন্য মা ও শিশুদের জন্য আইসিইউ বেড নতুন সংযোজন হলো। এছাড়া ঢাকা মেডিকেলে মোট ১৩৬টি আইসিইউ সংযুক্ত হলো।
মন্ত্রী বলেন, করোনার সময় অনেক আইসিইউ’র দরকার ছিল। তখন সারা বাংলাদেশে ২০০ আইসিইউ ছিল। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কিন্তু বর্তমানে সারাদেশে ১৫০০ আইসিইউ করা হয়েছে। আরও কিছু চলমান রয়েছে। চিকিৎসার মান, শিক্ষার মান বাড়াতে ট্রেনিংয়ের দরকার। সেক্ষেত্রে ঢাকা মেডিকেলে একটি ট্রেনিং কমপ্লেক্স করা হয়েছে। রোগী এবং রোগীর স্বজনদের সময় বাঁচাতে ঢাকা মেডিকেলে ই-টিকেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। রোগীদের আর লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে না। অনলাইনে টিকিট নিয়ে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে যেতে পারবে।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খুবই দুঃখজনক। আমরা খুবই দুঃখিত। আপনারা জানেন, কোনো রকম অন্যায় অনিয়ম দেখলে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। সেই ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল হাসপাতালও যদি অনিয়ম করে থাকে আইনুযায়ী অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠান যদি অনিবন্ধিত কাউকে দিয়ে যদি চিকিৎসা করিয়ে থাকে, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুতই কমিটি তাদের রিপোর্ট দেবে। তবে সেন্ট্রাল হাসপাতালে আইসিইউ চালুর বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।
ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, বাংলাদেশে সরকারি অথবা বেসরকারি কোনো হাসপাতালে অবস্টেট্রিক আইসিইউ ও পেডিয়াট্রিক আইসিইউ আলাদাভাবে কোথাও নেই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এটি সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে।
পরিচালক বলেন, অবস্টেট্রিক আইসিইউ হচ্ছে গর্ভকালীন সময় দেখা যায় মায়েরা নানা কারণে অসুস্থ হয়ে ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চলে যায়। তখন তাদের আইসিইউর প্রয়োজন হয়। এর জন্যই এ আইসিইউ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পেডিয়াট্রিক শিশুরা অনেক সময় ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে চলে যায়। তখন তাদের আলাদাভাবে আইসিইউ প্রয়োজন হয়। এজন্যই পেডিয়াট্রিক আইসিইউ দরকার হয়।
পরিচালক আরও বলেন, ৫০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড ঢামেক বার্ন ইউনিটের পিছনে এটি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত সেখানে নিউরোসার্জারি রোগীদের রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। কারণ একটি নির্দিষ্ট বিভাগে নিউরোসার্জারি রোগীদের প্রচুর চাপ থাকে। নিউরোসার্জারির ১০ বেডের আইসিইউ হবে।
পরিচালক বলেন, হাসপাতালের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বহির্বিভাগে দেখা যায় রোগীদের প্রচণ্ড চাপের কারণে টিকিট কাউন্টারের লাইন লেগে যায়। সে লাইনে থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অনলাইনে টিকেটিং চালু করা হচ্ছে। যাতে রোগীরা সরাসরি অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করে চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে সরাসরি চিকিৎসা নিতে পারবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এজেডএস/জেএইচ