ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৩ জনের ছানি অপারেশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে নিখরচায় ৩৩ জনের ছানি অপারেশন ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গরিব ও দুস্থ ৩৩ জন রোগীর নিখরচায় চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও মইনউদ্দিন-মুক্তারউদ্দিন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন করা হয়।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার, ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি ও ডা. আক্তার ফেরদৌসি জাহান। ১০ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারীসহ মোট ৩৩ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম (৫০) দীর্ঘদিন ধরে চোখের ছানিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। যে কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম করার সময় চোখে ঝাপসা দেখতেন। টাকার অভাবে চোখের ছানি অপারেশন করাতে পারেননি। বসুন্ধরা আই হসপিটাল থেকে চোখের ছানি অপারেশন করে বেশ আনন্দিত এ বৃদ্ধা।  

কথা হলে তিনি বলেন, চোখে ঝাপসা আর অন্ধকার দেখতাম সবকিছুই। গ্রামে যখন ডাক্তাররা গেলেন তখন শুনেছি তারা না কি বিনামূল্যে অপারেশন করাবে। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব না। যারা আমার চোখের অপারেশন বিনামূল্যে করলেন তাদের জন্য দোয়া করি।
 

প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চোখের ছানিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন আরেক বৃদ্ধা আম্বিয়া খাতুন (৬০)। পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই তার। যে কারণে চোখের চিকিৎসা করাতে পারেননি। বিনামূল্যে বসুন্ধরা আই হসপিটাল থেকে চোখের ছানি অপারেশন করে বেশ খুশি এ বৃদ্ধা।  

কথা হলে তিনি বলেন, চোখে আগে সবকিছু অন্ধকার দেখতাম। মানুষের চেহারা বোঝা যেত না। এখন ডাক্তার বলছেন অপারেশনের পর ভালো হবে।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, আজ আমরা ৩৩ জন রোগীর চোখের ছানির অপারেশন করেছি। আমরা প্রতি মাসে দুবার ক্যাম্প পরিচালনা করে থাকি।  

তিনি বলেন, আল্লাহ রাসুল (সা.) বলেছেন কেউ যদি ভালো কাজ করে আনন্দিত হয়, খারাপ কাজ করে দুঃখিত হয় তাদের তোমরা ইমানদার হিসেবে বলতে পারো। আল্লাহ রাসুলের এ বাণীকে কেন্দ্র করে আমি বলতে চাই, ভালো কাজ করলে আমাদের খুবই ভালো লাগে। এখান থেকে যারা বিনামূল্যে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করেছেন।  

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফাইজা রহমান বলেন, গরিব, দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগ থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারাদেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৭২৩ জনের বেশি রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।

এ ক্যাম্পটি গত ১৪ মার্চ, ২০২৩ কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার খনারচর নয়াহাটি মোড়ে মইনউদ্দিন-মুক্তারউদ্দিন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে ৫৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নেন। এর মধ্যে ১৫০ জনকে চোখের ছানি, নেত্রনালি ও মাংস বাড়ার কারণে অপারেশনের জন্য নির্বাচন করা হয়। আজ সেখানকার দ্বিতীয় ব্যাচের ৩৩ জন রোগীর অপারেশন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
ইএসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।