ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ময়মনসিংহের এক গ্রামে মাসিক জটিলতায় ভুগছেন ১৭.৫ শতাংশ নারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
ময়মনসিংহের এক গ্রামে মাসিক জটিলতায় ভুগছেন ১৭.৫ শতাংশ নারী মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার পূর্ব দরিল্যা গ্রামে মাসিক সংক্রান্ত শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। এর মধ্যে মাত্র ৮ দশমিক ২ শতাংশ নারী শারীরিক জটিলতার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস উপলক্ষে ইয়ুথ প্ল্যানেট আয়োজিত মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। পাশাপাশি জরিপের এ ফলাফলকে আশঙ্কাজনক বলে অবহিত করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার পূর্ব দরিল্যা গ্রামে জরিপটি চালায় ইয়ুথ প্ল্যানেট। এতে ওই গ্রামের বিভিন্ন বয়সের ৯৭৫ জন নারী অংশগ্রহণ করেছে বলে জানানো হয়।

সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, ইয়ুথ প্ল্যানেট দীর্ঘদিন এ এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে আসছে। ফলে এ এলাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যা বর্তমানে ৫০ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

জরিপে আরও দেখা যায়, ওই এলাকায় কিশোরী এবং তরুণীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। ৯-১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ১৯-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে এ সংখ্যা মাত্র ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। যারা ন্যাকড়া বা পুরাতন কাপড় ব্যবহার করেন, তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন ৪৭ শতাংশ নারী। ন্যাকড়া বা পুরাতন কাপড় ব্যবহারের প্রবণতাও ত্রিশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে বেশি পরিলক্ষিত হয়। ব্যবহৃত প্যাড ফেলার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন, অর্থাৎ কাগজে মুড়ে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে বা মাটিতে গর্ত করে ফেলেন ৭১ শতাংশ নারী।

জরিপে আরও দেখা যায়, স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার না করার সব চাইতে বড় কারণ এর ব্যয়বহুলতা। প্রায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এ কারণে প্যাড ব্যবহার করেন না। এছাড়া দোকানে প্যাড চাইতে গেলে ইভটিজিং এর ভয়, অভিভাবকের কাছে বলতে সংকোচ ও অন্যান্য কারণেও স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করেন না অনেকে। মাসিক নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে ৮৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী পরিবারের নারী সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন। আর ৬০ শতাংশ আলোচনা করেন পরিবারের পুরুষ মূলত স্বামীর সঙ্গে।

এ জরিপ পুরো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না জানিয়ে ইয়ুথ প্ল্যানেটের প্রতিষ্ঠাতা এ বি এম মাহমুদুল হাসান বলেন, গত তিন বছর ধরে ইয়ুথ প্ল্যানেট ওই এলাকায় মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা উন্নয়নে কাজ করে আসছে। কাজের শুরুতে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জরিপ না করলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, কর্মশালায়, প্রশিক্ষণে নারীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে বুঝেছি, এ সংখ্যা ছিল খুবই কম। প্রকল্প এলাকায় তিন বছরে আমরা স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার ২০ শতাংশ বাড়িয়েছি। আগে ব্যবহৃত স্যানিটারি প্যাড যত্রতত্র ফেলে রাখতে দেখা গেলেও ব্যবহারের পর স্যানিটারি প্যাড মাটিতে পুঁতে রাখার হার এখন ৭০ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার কামরুজ্জামান ফ্লোরা, ব্র্যাক হেলথ প্রোগ্রামের নলেজ ম্যানেজমেন্ট ও কমিউনিকেশন বিভাগের ম্যানেজার দীপান্বিতা ঘোষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রেজাউল করিম কাজল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সঙ্গিতা ইমাম ও ক্রিসচিয়ান এইডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মুশফেকুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।