ঢাকা: মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে সীমিত আকারে বহির্বিভাগ ও ইনডোর সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছেন, আগের মতো চালু থাকবে জরুরি বিভাগের সেবাও।
সোমবার (২সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।
তাদের পক্ষে নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহদ বলেন, আজ আমরা যে নতুন বাংলাদেশ দেখছি, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি সেটা মূলত বিগত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি; এর পুরোটাই সম্ভব হয়েছে শুধু ছাত্র-জনতার অভ্যুথানের ফলে। এই আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের বিদায় এবং রাষ্ট্র সংস্কার।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বড় মন্ত্রণালয় হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আমরা দেখেছি চিকিৎসকদের ওপর আগেও আক্রমণ হয়েছে। সেগুলোর কোনোটারই সুষ্ঠু বিচার হয়নি। এরই ফলশ্রুতিতে গত ৩১ আগস্ট পুনরায় হাসপাতালের নিউরোসার্জারির কর্তব্যরত দুজন চিকৎসক ডা. ইমরান ও ডা. মাশরাফির ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় সর্বস্তরের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী সমাজ চারটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা কমপ্লিট শাটডাউনেরর কর্মসূচি নেয়।
ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, স্বস্থ্য উপদেষ্টা দীর্ঘক্ষণ আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওনাকে ধন্যবাদ জানাই, আমাদের আহ্বানে সাড়া দেওয়া ও সময় দেওয়ার জন্য। তারা তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেন, যার প্রমাণ হিসেবে ঢামেক হাসপাতালে হামলাকারী একজন সন্ত্রাসী ও গতকাল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে হামলাকারী চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও ধন্যবাদ জানাই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল, মুগদা হাসপাতাল, ও ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিরাপত্তা বাহিনী দেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেডিকেলসহ বাংলাদেশের সব হাসপাতালের ইমার্জেন্সি চালু করা হয়েছে।
এই চিকিৎসক বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা এবং দেশদ্রোহী দালালরা এদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ষড়যন্ত্র করার জন্য এই হামলা করেছে। তাই আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি, অতি দ্রুত অন্যান্য মেডিকেলসমূহ এবং জেলা-উপজেলা হাসপাতালে নিরাপত্তাবাহিনী নিয়োগ না করা হলে এই আক্রমণ আবার আসতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আমরা দুটি দাবি পেশ করছি। যেসব সন্ত্রাসী এখনো গ্রেফতার হয়নি তাদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; যেন এ ধরনের অপরাধ আর কোথাও না হয়। অতিদ্রুত চিকিৎসক ও রোগীদের কল্যাণ নিশ্চিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন এবং হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগে খসড়া প্রণয়ন করতে হবে।
ডা. আব্দুল আহাদ আরও বলেন, বাংলাদেশের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আগামীকাল থেকে সীমিত পরিসরে আউটডোর সেবা চালু করা হবে। যেটা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চালু থাকবে এবং সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি থাকবে। ইনডোর সেবা রুটিন ওয়ার্ক পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চালু থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা,সেপ্টেম্বর ০২,২০২৪
এজেডএস/এমএম