যশোর: যাশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের অন্তর্বিভাগের জরুরি সময়ে প্রায় অর্ধেক রোগী চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী প্রায় ৪৫ শতাংশ বহির্বিভাগে ওষুধ পায় না।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যশোর শাখার রিপোর্ট কার্ড জরিপ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সনাক। এ প্রতিবেদনে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী হাসপাতালের সেবা গ্রহীতা ৫শ ৪৩ জনের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এতে মোট সেবা গ্রহীতার মধ্যে ৪৫.৫৮ শতাংশ রোগী চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী হাসপাতাল থেকে ওষুধ পায় না।
অপরদিকে, সিটিজেন্স প্রতিবেদন কার্ডে ২০০৯ সালের জরিপের তুলনায় এবারের জরিপে হাসপাতালে ৪টি বিষয়ে সেবার মান কমেছে ১৯.৭৭ শতাংশ থেকে ৪৯.০৯ শতাংশ। এর মধ্যে অন্যতম অন্তর্বিভাগের জরুরি সময়ে ৪৯.০৯ শতাংশ রোগী চিকিৎসা সেবা পায় না। এর হার ২০০৯ সালে ছিল ৩৮.০ শতাংশ।
এছাড়াও জরুরি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসকের উপস্থিতি থাকে না, বেশিরভাগ রোগীকে সেবা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন খাতে নিয়মবর্হিভূত টাকা দিতে হয়, চিকিৎসকের সেবার মান, টিকেট ক্রয়, কেবিন ভাড়া, পরীক্ষা, ইনজেকশন বা স্যালাইন পুশের জন্য অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার অসঙ্গতির চিত্র ধরা পড়েছে।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) যশোর শাখার সভাপতি আবু সালেহ তোতার সভাপতিত্বে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতারের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা(আরএমও) আলমগীর কবির, সনাকের স্বাস্থ্য উপ কমিটির সভাপতি ডা. আমির হোসেন, সনাকের সদস্য ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সুসমাজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুজিবুদ্দৌলাহ সরদার কনক প্রমুখ।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সনাকের ডেপুটি ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম।
সনাকের গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী খোরশেদ আলম বাংলানিউজকে জানান, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগে গড়ে ৬শ ৩১ জন রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে। এদের মধ্যে ৫শ ৪৩ জন অংশগ্রহণকারীর তথ্যের ভিত্তিতে জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আলমগীর কবির বাংলানিউজকে জানান, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে এখানে মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। বর্তমানে হাসপাতালে মোট আসনের দেড়গুণ রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু সেই তুলনায় জনবল নেই। সমস্যা সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে অনিয়ম দুর্নীতি রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যশোর শাখার সভাপতি আবু সালেহ তোতা বাংলানিউজকে জানান, সনাকের প্রতিবেদন প্রকাশ করার মূল উদ্দেশ্য সেবার মান সম্পর্কে মানুষকে জানানো। এর মাধ্যমে সংকট নিরসনের উপায় বের করা। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় করার জন্য জরিপ প্রকাশ করা হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৩
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর