ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেশের দেড় কোটিরও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৩
দেশের দেড় কোটিরও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে

ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশের ১ কোটি ৫৬ লক্ষ মানুষ ম্যালেরিয়া ঝুঁকিতে। ম্যালেরিয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ১৩ জেলার ৭০টি উপজেলার মানুষ, যার ৪০টি অবস্থিত বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে।

দেশের ম্যালেরিয়াপ্রবণ ১৩টি জেলার মধ্যে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি সর্বোচ্চ। এর পরপরই ঝুঁকিতে রয়েছে কুড়িগ্রাম, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মানুষ।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লারের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

‘জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা’ শীষক আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের ম্যালেরিয়া পরিস্থিতির ওপর এই উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, দৈনিক ইত্তেফাক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় জানানো হয়, ২০০৫ সালে বাংলাদেশে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০১ জন, ২০০৬ সালে ৩০৭ জন , ২০০৭ সালে ২২৮ জন , ২০০৮ সালে ১৫৪ জন, ২০০৯ সালে ৪৭ জন, ২০১০ সালে ৩৭ জন ও ২০১১ সালে ৩৬ জন মানুষ প্রাণ হারান । সর্বশেষ ২০১২ সালে খাগড়াছড়িতে ৬ জন, রাঙ্গামাটিতে ১ জন, বান্দরবানে ৩ জন ও কক্সবাজারে ১ জনসহ মোট ১১ জন মারা যান।

২০১২ সালে দেশের ৩১ লক্ষ ২৩ হাজার ৯শ’ ৫ জনকে পরীক্ষা করে ১১ লক্ষ ৮১ হাজার ২শ’ ৭৭ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া জীবাণু পাওয়া গেছে। এছাড়া ২০১১ ও ২০১২ সালে এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে মোট ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৯শ’ ৮৪ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, ২০১২ সালে ১৩ জেলায় পরীক্ষ‍া চালিয়ে মোট ২৯ হাজার ৫শ ১৮ জনের শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৩শ’ ৬২ জনের শরীরে ফ্যালসিফাম ম্যালেরিয়া, ১ হাজার ৪শ’ ৫৭ জনের শরীরে মারাত্মক ম্যালেরিয়া ও ১ হাজার ৬শ’ ৯৯ জনের শরীরে ভাইভ্যাক্স ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেছে।

বিশ্বের ৪৩৫ ধরণের এনোফিলিক্স মশার মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় দশটি প্রজাতি।

২০১৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে সভায় জানানো হয় । ম্যালেরিয়া নিয়ে এ মুহূর্তে দেশের ১২০টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং সরকারি ৮৩টি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। সচেতনতা, যথাযথ পরীক্ষা, বিনামূল্যে ও স্বল্প মূল্যে ওষুধ প্রাপ্তির কারণে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে সহজ হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।  

দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খোন্দকার মোহাম্মদ সিফায়েত উল্যাহ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যালেরিয়া গবেষক ডা: এমএ ফায়েজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনপিও ডা. এ মান্নান বাঙ্গালি , ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা: কামরুন্নাহার সুলতানা প্রম‍ুখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, কীটনাশক যুক্ত মশারি, মানুষের মধ্যে সচেতনতা, সরকারি বেসরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি পদক্ষেপের কারণে বিশ্বে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ মডেল।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৩
আরইউ/সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।