ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অনিদ্রায় সম্পর্ক ভেঙে যায়!

মো. আজিবুর রাহমান রাজিব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৩
অনিদ্রায় সম্পর্ক ভেঙে যায়!

ঢাকা: অনিদ্রা বা ঘুমের স্বল্পতার (ইনসোমনিয়া) কারণে মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তি লোপ পেতে পারে। শুধু তাই নয়, অনেক সময় প্রিয়জনের সঙ্গে সম্পর্কও ভেঙে যেতে পারে।



রাতভর যারা এপাশ-ওপাশ করে ঘুমকে চোখের কোনেও আনতে পারেন না তাদের জন্য নতুন এ দুঃসংবাদটি দিয়েছে যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক।

ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রায় ভোগা ছয় হাজার ৮০০ রোগীর পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশনের গবেষকরা বলেন, স্বল্প ঘুমের ব্যক্তির মধ্যে হতাশা কাজ করে বেশি। হৃদযন্ত্রে সমস্যার পাশাপাশি কাজেও মনোযোগ থাকে না তার। কমে যায় রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা। এছাড়া, স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে, এমনকি সম্পর্ক ভেঙেও যেতে পারে। সর্বোপরি স্বল্প ঘুমের ব্যক্তিটির মধ্যে মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।

গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনসোমনিয়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কলিন অ্যাস্পি বলেন, অনিদ্রা সমস্যাকে অবেহেলা করে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, এই রোগ আমাদের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, এমনকি আমাদের জীবনের সুখ-শান্তিকেও নষ্ট করে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শ্যন ডগো একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেন, ইনসোমনিয়া মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তি লোপ করে।

শনের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল ২৫ জন ইনসোমনিয়া রোগী এবং ২৫ জন স্বাভাবিক লোকের ওপর জরিপ চালায়।

জরিপে দু’পক্ষের স্মৃতি শক্তি ও মস্তিষ্কের এমআরআই (ম্যাগনেটিক রিসোনেন্স ইমাজিং) সক্ষমতার পরীক্ষা করা হয়।

ফলাফলে দেখা যায়, ইনসোমনিয়া রোগীর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা স্বাভাবিক লোকের মস্তিষ্কের চাইতে অনেক কম।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, অপর্যাপ্ত ঘুম শরীর, মন, দৈনন্দিন জীবন-ধারা সবকিছুর ওপরই মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই ইনসোমনিয়া রোগের কারণ খুঁজে বের করে এর সমাধান করতে হবে।

এ জন্য প্রথমে পথ্য ছাড়াই চিকিৎসা কর‍াতে হবে রোগীকে। যেমন, নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, ঘুমানোর অন্তত আট ঘণ্টা আগে উদ্দীপক জাতীয় (কাফেইন) কোনো পানীয় পান না করা, প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য যোগ-ব্যায়াম করা, ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম না করা এবং ঘুমের জন্য একটি সুন্দর নীরব পরিবেশ তৈরি করা। এছাড়া, মানসিক চাপ থাকলে সেটাও কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে।

পরম সত্য কথা হলো, নিয়মতান্ত্রিক জীবনধারায় ফিরে আসলে ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এর সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ তো থাকছেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৩
এইচএ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।